• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন ২ সেপ্টেম্বর

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩, ০৭:৪৩ পিএম

এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন ২ সেপ্টেম্বর

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কর্ণফুলি টানেল প্রধানমন্ত্রী অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখে উদ্বোধন করবেন। আবার একই মাসের মাঝামাঝিতে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল অংশের উদ্বোধন করবেন তিনি। এছাড়াও ১০০ সেতুর মতো ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে হবে। সেটির দিনক্ষণ খুব শিগগিরই জানানো হবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের দিন বিকেলে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পরের দিন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। আর যান চলাচলে আপাতত সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার। তার মানে ১০ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেট যাওয়া যাবে।

থ্রি হুইলার, মোটরবাইক চলাচল করবে না ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে এবং টোলের বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

বর্তমানে প্রকল্পের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের দক্ষিণ কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ যান চলাচলে জন্য প্রস্তুত হয়েছে। এ অংশের মেইন লাইনের দৈর্ঘ্য ১১.৫ কি.মি. এবং র‍্যাম্পের দৈর্ঘ্য ১১.০ কি. মি.। র‍্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ২২.৫ কি.মি.। এ অংশে উঠা-নামার জন্য মোট ১৫টি র‍্যাম্প (এয়ারপোর্ট-২, কুড়িল-৩, বনানী-৪, মহাখালী-৩, বিজয়সরণী-২ ও ফার্মগেট-১) রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি র‍্যাম্প যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্প:

প্রকল্পের নথি অনুসারে জানা যায়, রেল লাইন ধরে এ উড়াল সড়ক শুরু হয়ে বিমানবন্দর এলাকার কাওলা থেকে সরাসরি গিয়ে মিলবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে। আয়তন: মূল এলিভেটেড অংশের দৈর্ঘ্য ১৯.৭৩ কি.মি.। প্রকল্পে ওঠানামার জন্য মোট ২৭ কি.মি দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্প রয়েছে। র‍্যাম্পসহ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য ৪৬.৭৩ কি.মি.। আপাতত লক্ষ্য বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত চালুর।

এ প্রকল্পের সর্বমোট কাজ শেষ হয়েছে ৬৫ শতাংশ। প্রকল্পটি ২০২৪ সালে জুনে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

পুরো প্রকল্প শেষ হলে রাজধানীকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের (কুতুবখালী) সঙ্গে যুক্ত করবে এক্সপ্রেসওয়েটি। প্রকল্পের ভৌত কাজের প্রথম ধাপে ১৪৮২টি পাইল, ৩২৬টি পাইল ক্যাপ, ৩২৫টি কলাম, ৩২৫টি ক্রস বিম, ৩ হাজার ৪৮টি আই গার্ডার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৪৮টি আই গার্ডার এবং ৩২৮টি ব্রিজ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই ভৌত কাজের অগ্রগতি ৯৭.২৮ শতাংশ। প্রকল্পের ভৌত কাজের দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৬৩৩টি পাইল, ৩৩৫টি পাইল ক্যাপ, ৩২৩টি কলাম, ৩২০টি ক্রস বিম, ২ হাজার ৩০৫টি আই গার্ডার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া ২ হাজার ৪৪টি আই গার্ডার এবং ২৩৩টি ব্রিজ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই ভৌত কাজের অগ্রগতি ৫৪.২২ শতাংশ।

সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি) তিন ধাপে উড়াল সড়ক প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রথম ধাপ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয় ধাপ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার রেলক্রসিং পর্যন্ত। তৃতীয় ধাপ মগবাজার রেলক্রসিং থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। এই উড়াল সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। এই প্রকল্পের নির্মাণকাল ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।

জানা গেছে, উড়াল সড়কের রুট হচ্ছে কাওলা, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। পুরো পথই রেললাইন ঘেঁষে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে দুই হাজার ৪১৩ কোটি টাকা।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করছেন ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের (সিএসআই) এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের কর্মকর্তারা।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ