• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বিএনপির প্রিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলায় তারেকের শাস্তি হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩, ০২:৪৯ এএম

বিএনপির প্রিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলায় তারেকের শাস্তি হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

রংপুর ব্যুরো

বিএনপির প্রিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলায় তারেক রহমানকে আদালত শাস্তি দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২ আগস্ট) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রিয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দেয়া মামলায় তারেক রহমানকে শাস্তি দিয়েছেন আদালত। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে, আর ক্ষমতার বাইরে থেকে জ্বালাও-পোড়াও করে দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির শুরু হয়েছিল। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়েছিল। ১৯৮১ সালে আমি বাংলাদেশে এসে দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরেছি। সে সময় মানুষের হাহাকার দেখেছি। আমার প্রতিজ্ঞা ছিল, যখনি সরকার গঠন করতে পারব এই মানুষদের ভাগ্য আমরা পরিবর্তন করব। যে স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করে রাস্তায় চলন্ত বাসে আগুন দিয়েছে কত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এরা কি মানুষের জাত, এরা মানুষের জাত না। ক্ষমতায় থাকতে লুট করে খেয়েছে। ক্ষমতায় বাইরে থেকে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। রাস্তাঘাট কেটে দিয়েছে। নতুন রেল কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে, নতুন বাস কিনেছি পুড়িয়ে দিয়েছে।

ওই জ্বালাও-পোড়াও ধ্বংসই করতে পারে খালেদা জিয়া ও তার কুপুত্র তারেক জিয়া। এরা মানুষের কল্যাণ করতে জানে না। দেশের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে এখন সেই টাকা ব্যবহার করে যাচ্ছে। কোত্থেকে আসে এত বিলাসিতা সেটা আমার প্রশ্ন।

শেখ হাসিনা বলেন, যখন ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলাম তখনও মন্দা ছিল না। কিন্তু ২০০১ সালে যখন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসে তখন তার ছেলেরাসহ দুই হাতে টাকা পয়সা লুট করে। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আবার দেশের মন্দা শুরু হয়। তারপর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি। তারপর থেকে এ দেশের কোনো মানুষের আর কষ্ট হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক এলাকায় উন্নয়নের জন্য কাজ করেছি। নারীদের জন্য কাজের সুবিধা করে দিয়েছি। আমাদের কাজের লক্ষ্য দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নতি করা। এ অঞ্চলে জীবনেও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না, মঙ্গা দেখা দেবে না। বাংলাদেশে কোনো ভূমিহীন মানুষ থাকবে না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তায়নও করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে সারের দাবিতে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কৃষকের ঘরে সার পৌঁছে দিয়েছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। রংপুরেও খালি হাতে আসিনি। ২৭ উন্নয়ন প্রকল্প উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছি। রংপুরের মানুষের উন্নয়ন যাতে ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যবস্থা করেছে সরকার।’

প্রত্যেক এলাকায় আওয়ামী লীগ উন্নয়নের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দারিদ্র্যের হার কমেছে। আমাদের লক্ষ্য দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, উন্নয়ন করা। ভবিষ্যতে রংপুরে আর কখনোই দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে না। সরকার সে ব্যবস্থা নিয়েছে। বাংলাদেশে আর কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলায় কোনো মানুষ আর ঠিকানাহীন থাকবে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী আছে, যারা সবসময় দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আওয়ামী লীগ মানুষের উন্নয়ন করে। দেশের প্রতিটি অঞ্চল সমানভাবে উন্নয়ন হবে সেটাই সরকারের লক্ষ্য। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে লুটপাট করেছে। আর ক্ষমতার বাইরে থেকে জ্বালাও-পোড়াও করে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশ ধ্বংস করে, আওয়ামী লীগ সৃষ্টি করে। আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে। বাকি যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা কোনো কাজ করেনি।

এর আগে তিনি বুধবার (২ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভাস্থলে আসেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমে তিনি ২৭ উন্নয়ন প্রকল্প ও ৫ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এরপর রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশ মঞ্চে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রংপুরের উদ্দেশে রওনা করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর সোয়া ১টায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেখান থেকে তিনি সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসে আসেন। সেখানে তিনি বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভা শেষে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তিনি ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডের উদ্দেশে সড়কপথে রওনা দেবেন। পরে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন শেখ হাসিনা।

 

সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন

 

জেকেএস/

আর্কাইভ