প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৩, ০৩:১৮ এএম
দীর্ঘ প্রায় ১৩ বছর পর বুধবার (২ আগস্ট) রংপুরে আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে রংপুরসহ আশপাশের থানাগুলোও সেজেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা যার যার অবস্থান তুলে ধরে তৈরি করেছেন তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দাবি পূরণের আশায় বুক বেঁধেছেন রংপুরের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী এবার রংপুরে ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধনের ঘোষণা দেবেন। সঙ্গে নতুন প্রতিশ্রুতির ঘোষণাও আসতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয় জনসাধারণ।
জানা গেছে, বুধবার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা রংপুর জিলা স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। সভামঞ্চ নির্মাণসহ অন্যান্য প্রস্তুতি এখন শেষের পথে। জিলা স্কুল মাঠে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রী প্রায় রংপুরে সাড়ে ৩ ঘণ্টা অবস্থান করবেন। প্রধানমন্ত্রী বুধবার বেলা সাড়ে ১২টায় তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টার দুপুর ২টায় রংপুর ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। পরে দুপুর ২টা ৫মিনিটে ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাড থেকে সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউসে যাবেন। এসময় বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন শেখ হাসিনা। পরে বিকেল ৩টায় প্রধানমন্ত্রী রংপুর জিলা স্কুল মাঠের জনসভায় উপস্থিত হবেন। সেখানে তিনি রংপুর বিভাগের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। মহাসমাবেশে বক্তব্য শেষ করে পরে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে তিনি ক্যান্টনমেন্ট হেলিপ্যাডের উদ্দেশ্যে সড়কপথে রওনা দেবেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন শেখ হাসিনা।
সোমবার (৩১ জুলাই) সকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, এস এম কামাল হোসেনসহ স্থানীয় দলের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে দীর্ঘ ১৩ বছর পর আসছেন। ফলে এখানকার লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে আনন্দ ও উৎসব। রংপুরে এখন এক ধরনের উৎসব চলছে। জনসভা ঘিরে এখন একাট্টা ও উজ্জীবিত রংপুর বিভাগ আওয়ামী লীগ। সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই জনসভার মধ্য দিয়ে রংপুর আওয়ামী লীগ আরো গতি ফিরে পাবে। জনসভার মধ্য দিয়ে তৃণমূলকে শক্তিশালী করে বিরোধী জোটের মাঠের আন্দোলন মোকাবিলা ও রংপুর বিভাগকে আওয়ামী লীগের ঘাটিতে পরিণত হবে। এ জনসভায় অন্তত ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে জনসমুদ্রে পরিণত হবে রংপুর জিলা স্কুল মাঠ।
উল্লেখ্য: শেখ হাসিনা সর্বশেষ রংপুরে এসেছিলেন ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর। এ সময় তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ ও তারাগঞ্জে দুটি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এর আগে ২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাজোটের জনসভায় উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ এক যুগ পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে আসছেন। তিনি রংপুর জেলা স্কুল মাঠে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে সামনে রেখে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। গত সাড়ে ১৪ বছরে সারা বাংলাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। এ থেকে বাদ যায়নি রংপুর বিভাগও। রংপুর বিভাগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। মঙ্গাপীড়িত রংপুর আর এখন নেই। এখন রংপুর খাদ্যের সম্পূর্ণ। আমাদের যে খাদ্য প্রয়োজন তার চেয়েও প্রায় দ্বিগুণ উৎপাদন হয়। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি আমাদের নেত্রী কখন আসবেন। আমাদের জন্য আরো কি কি উপহার দিয়ে যাবেন। এ জনসভায় অন্তত ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একে এম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, মহাসমাবেশে ১০ লাখের বেশি মানুষের সমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রংপুর বিভাগের ৫৮টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ আনার প্রস্তুতি রয়েছে। জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের বিভাগীয় বর্ধিত সভাও করা হয়েছে। বুধবার রংপুর জেলা স্কুল মাঠে জনতার ঢল নামবে।
সিটি নিউজ ঢাকার ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন
জেকেএস/