প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৩, ০২:১২ এএম
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেছেন, বর্তমান প্রসেস যদি থাকে, তাহলে শত চেষ্টা করলেও একটা নিউট্রাল (নিরপেক্ষ) নির্বাচন করতে পারবে না সরকার।
তিনি বলেন, গত ১৪-১৫ বছরের সরকারি কর্মকর্তা যারা চাকরিতে ছিলেন, তারা কি পলিটিক্যাল পার্টির ফেবার নেননি। আজকে যদি প্রাইম মিনিস্টার সবার পায়ে ধরে যে, ভাই যা করছি করছি আর ভবিষ্যতে করতে দেব না। তাও বন্ধ করতে পারবে না। কারণ ১২-১৪ লাখ লোক লাগে একটা নির্বাচন চালাতে। এত লোক কোথা থেকে পাবে? সরকারি চাকরিজীবীরা জানে, আজকে যদি আরেকটা সরকার আসে তাহলে প্রথমে তার চাকরিটা নিয়ে টানাটানি করবে।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত ‘ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড দ্য রুল অব ল’ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ভালো ছাত্ররাই পরীক্ষা দিয়ে ক্যাডার সার্ভিসে যায়। ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে দুই মাস অনেক কিছু শেখানো হয়। সবকিছু বোঝানোর পর শেষের দিকে একটা লেকচার দেওয়া হয়। এই দুই মাসে যা শিখেছো এর বাইরে মূল কথা হলো, বস কী চায় সেভাবে করতে হবে। এতেই তার বিদ্যা শেষ হয়ে যায়। ওই ছাত্র যা শিখে এসেছে, আর যা শিখেছে তার সবকিছু এখানে গোল্লায় যায়। এটি হচ্ছে ব্রিটিশদের দেওয়া পিরামিড এডমিনিস্ট্রেশন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে দুটি জিনিস ঢুকানো হয়েছে এবং কেন ঢুকানো সেটি আমরা এখনো জানি না। দুটি জিনিস হচ্ছে গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্র। এগুলো তেল ও পানির মতো, যা একে অপরের সঙ্গে মিশে না। যারা কন্সটিটিউশন ঢুকিয়েছেন তারাই বলতে পারবেন, কেন এটি সেখানে ঢুকিয়েছেন। যারা কন্সটিটিউশন ক্লেম করেছিলেন তাদের মাথায় এটি আসলেও তারা বেকায়দায় পড়ে এটি করেছেন। আমাদের সংবিধানের একটি জিনিস রয়েছে পার্লামেন্টের ফর্ম অব ডেমোক্রেসি।
আব্দুর রউফ আক্ষেপ করে বলেন, আইডি কার্ডের সিস্টেমটা আমি করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান ইলেকশন কমিশনে আমার সময়কার কোনো রেকর্ডপত্র নাই।
সাংবাদিকদের সমালোচনা করে এই বিচারপতি বলেন, আমি এর আগে একটি মিটিংয়ে যা বলি নাই, সাংবাদিকরা তা ছাপিয়েছেন। এজন্য আমি সাংবাদিকদের অনেকটা ভয় পাই। সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ, উল্টোপাল্টা কিছু লিখলে মনটা খারাপ হয়। আপনারা কেউ উল্টাপাল্টা কিছু লিখবেন না। আমি কারো পক্ষের নই, বিপক্ষেরও নই। আমি সাধারণ নাগরিক। সাধারণ নাগরিকের দৃষ্টিকোণ থেকে যেটুকু বলা দরকার আমি সেটুকু বলেছি। কাউকে আঘাত বা খর্ব করার জন্য নয়। কারণ সবাইকে মিলেই একটা চিন্তার মধ্যে আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার প্রমুখ। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।
বিএস/