প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৩, ০৬:২৮ পিএম
মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার আসন্ন ঢাকা সফর নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিম ঘেঁষা মানসিকতা নিয়ে আসা বিদেশিদের এদেশের ওপর চাপ প্রয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করে। তাদের মতে, দেশের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে কূটনীতিতে কৌশলী হতে হবে সরকার, রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজকে।
ভারতে ৪ দিনের সফরে আছেন বেসামরিক, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। এ সফর শেষে দিল্লি থেকেই আজ (মঙ্গলবার, ১১ জুলাই) রাতে তার ঢাকায় আসার কথা।
চারদিনের এ ঢাকা সফরে তার সঙ্গী থাকছেন ঠিক ৬ মাস আগে ঢাকা সফর করে যাওয়া দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
ঢাকা-ওয়াশিংটন পররাষ্ট্র দফতর বলছে,
মার্কিন এ প্রতিনিধিদের আলোচ্য সূচিতে রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম ইস্যু, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবপাচার মোকাবিলার বিষয় উঠে আসবে। উজরা জেয়া সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে।
প্রতিনিধিদলটির কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনেরও কথা রয়েছে। আর দ্বিপাক্ষিক ইস্যুগুলো নিয়ে মার্কিন এ আন্ডার সেক্রেটারি বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। যদিও এ মার্কিন প্রতিনিধিদলকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিসহ আলোচনায় শীর্ষে রয়েছে নির্বাচন প্রসঙ্গ।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে,
ঢাকার প্রতি পরাশক্তিধর মার্কিন আগ্রহ নতুন নয়; তবে তা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। এ ধরনের সফরকে স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন তারা।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিদেশি চাপ তৈরির মূলে রয়েছে দেশের পশ্চিম ঘেঁষা অন্ধচিন্তা। কূটনীতির খেলায় বিদেশি শক্তিগুলো সব পক্ষকে খুশি রেখেই স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে বলে সর্তকও করেন তারা।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব অধ্যাপক শহীদুল হক সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ‘বিষয়টা এমন নয় যে, পৃথিবীর ১৯৩টি দেশের মধ্যে শুধু বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট আগ্রহী। এগুলোর মধ্যে ১৮০টি দেশ নিয়েই তারা আগ্রহী। তারা বড় ক্ষমতাধর। হঠাৎ করে এডহকভাবে যে তারা চলে আসছেন, বিষয়টা এমন না। এটার একটা ধারাবাহিকতা আছে।’
এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন,
বিএনপি এখনো ঠিক করেনি যে, তারা নির্বাচনে যাবে কি যাবে না। জনগণ যেমন পরিষ্কার হতে চাচ্ছে, বিদেশিরা তো তা আরও বেশি করে চাচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় তারা চাচ্ছে, বাংলাদেশের গণতন্ত্র যেন মজবুত হয়। সেই প্রক্রিয়ার ব্যাপারে আমার প্রশ্ন সব সময় তাদের কাছে থাকে। এছাড়া, এলিট বলতে আমি কেবল অর্থনৈতিক বলছি না, ইন্টেলেকচুয়াল এলিটও বলছি। এটা যতদিন না পরিবর্তন হবে, ততদিন কিন্তু আমি আমার ওই যে পরিবর্তনগুলো করতে পারবো না।
গণতান্ত্রিক এবং রাজনৈতিক আস্থার পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক কোনো চাপ সহায়ক হয়ে উঠবে না বলেও জানান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
জেকেএস/