• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গণতন্ত্র ও সুখী সূচকে অগ্রগতিই দেশে সুশাসনের প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৩, ০২:০৪ এএম

গণতন্ত্র ও সুখী সূচকে অগ্রগতিই দেশে সুশাসনের প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এবং সুখী দেশের সূচকে আমাদের সাত ধাপ অগ্রগতিই প্রমাণ করে যে দেশে গণতন্ত্র সংহত হয়েছে, সুশাসন রয়েছে।’

সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনায় আহত সাংবাদিক ও নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের ৬৫ জনের মাঝে ৬৯ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন। তথ্য  ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এ সময় স্বাগত বক্তব্য দেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বাদল, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ধারণাটি শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। তিনিই প্রথম জাতীয় প্রেসক্লাবে ঘোষণা দেন যে, মাঝেমধ্যে সহায়তা দেয়ার চেয়ে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো উত্তম। তার সেই চিন্তা থেকেই প্রথমে কল্যাণ তহবিল গঠন এবং তারপর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আজ সত্যিকার অর্থে দেশে যেসব সাংবাদিক কষ্টে থাকেন, দুর্ঘটনায় পতিত হন কিংবা নিহত হন, তাদের ও পরিবারের জন্য একটি ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওর যাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই শুরু হয়েছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৮ সালে ছিল ১০টি টেলিভিশন, এখন ৩৫টি টেলিভিশন সম্প্রচারে আছে। আরও ৭-৮টি সম্প্রচারের অপেক্ষায়। ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন ৪০০টি দৈনিক পত্রিকা ছিল, এখন ১ হাজার ২৫০টির বেশি দৈনিক পত্রিকা। সম্প্রচার হচ্ছে বেসরকারি এফএম ও কমিউনিটি রেডিও, প্রকাশিত হয় হাজার হাজার অনলাইন পত্রিকা। গণমাধ্যমের এই যুগান্তকারী বিকাশ শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের গণমাধ্যমবান্ধব নীতির কারণেই সম্ভব হয়েছে।’

গণমাধ্যমের এই বিকাশের সঙ্গে গণতন্ত্রের বিকাশও ঘটেছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আপনারা জানেন যে, প্রতিনিয়ত সকাল-বিকাল-সন্ধ্যাবেলায় বিরোধী দল, বিশেষ করে মির্জা ফখরুলসহ তাদের নেতারা বলেন: ‘আমাদের কথা বলার অধিকার নাই।’ তারা তিন বেলা কথা বলেন আর বলেন: ‘আমাদের কথা বলার অধিকার নাই।’ তাদের এই হাঁকডাক এবং ‘গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন’ মন্তব্যের মধ্যেই বাংলাদেশ গত বছর গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এগিয়ে ৭৫ থেকে ৭৩তম স্থানে উন্নীত হয়েছে।”

আর সুখী দেশের সূচকে বাংলাদেশ সাত ধাপ এগিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সুখী সূচকে ভারত, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে আমাদের অবস্থান এখন ৯৪তম। ভারতের অবস্থান ১৩৬তম, পাকিস্তানের ১২১তম, শ্রীলঙ্কার অবস্থান ১২৭তম। আমাদের অবস্থান ৯৪তম। এটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুশাসনের প্রমাণ, গণতন্ত্রের অভিযাত্রার প্রমাণ।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে গণমাধ্যম অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে। এখন প্রয়োজন দায়িত্বশীলতার। আধুনিক গণতন্ত্রের সূতিকাগার যুক্তরাজ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন আছে, তেমনি দায়িত্বশীলতাও আছে। সেখানে একটি অসত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে ১৩০ বছর চলার পর বিশ্বখ্যাত পত্রিকা ‘নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বন্ধ হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের একজন সংসদ সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে বিবিসির পুরো টিমকে[ পদত্যাগ করতে হয়েছে। কয়েক দিন আগে বিবিসির মহাপরিচালককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। যুক্তরাজ্যে টেলিভিশন এবং পত্রিকায় অসত্য বা ভুল সংবাদ বা কারো ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশের কারণে সেই গণমাধ্যমকে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হয়। আমাদের দেশে ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে কোনো পত্রিকা বন্ধ হয়নি, কোনো টেলিভিশনের পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়নি।’

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এবং সরকারের নীতি অনুযায়ী গণমাধ্যম অবাধ এবং স্বাধীনভাবে কাজ করবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের কাছে আমার একটি বিনীত নিবেদন: স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার দিকেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যমের গণতন্ত্র সংহত হবে, দেশ এগিয়ে যাবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশ পৌঁছাবে।’

উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৪২ জন সাংবাদিকের অনুকূলে ট্রাস্ট থেকে ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২ হাজার ২৯৮ জনকে প্রধানমন্ত্রীর করোনাকালীন বিশেষ সহায়তা হিসেবে ২ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেয়া হয়।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ