• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

‘সবাই মিলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে’

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৩, ১২:৩৯ এএম

‘সবাই মিলে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা বীরের জাতি৷ অতীতে আমরা কোনো অন্যায় বা অপকর্ম মেনে নেইনি৷ একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা বার বার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি৷ আমাদের গারো, হাজং ও মারমাসহ সবাইকে নিয়ে চলতে চাই৷ সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে৷ 

শুক্রবার (৭ জুলাই) রাজধানীর নটরডেম কলেজ অডিটোরিয়ামে উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের আয়োজনে ১৬৮তম ‘মহান সাঁওতাল বিদ্রোহ বিদস’ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন৷

আসাদুজ্জামান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এ দেশ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, সাঁওতাল কিংবা এ সমতল ভূমির সবার৷ আমরা তার এ ডাকে সবাই সাড়া দিয়েছিলাম৷ স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম৷ কিন্তু ঘাতকরা তাকে হত্যা করেছিল৷ 

তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তর হচ্ছি৷ এ যাত্রায় সবাইকে এগিয়ে যেতে হবে৷ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে হবে৷ আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সবাই বাঙালি। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ সাঁওতালদের জন্য আলাদা ভূমি কমিশনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে থাকবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি৷ 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের ছয়টি ঋতুর মতো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকেরা একসঙ্গে বসবাস করছি৷  সাঁওতাল বিদ্রোহের সময় যোদ্ধারা কখনো ইংরেজদের বন্ধুক বা গুলির ভয় করেনি৷ আমাদের এই বঙ্গে অনেক আন্দোলন হয়েছে৷ ইলা মিত্রও তেভাগা আন্দোলন করেছিলেন৷ তখন ইংরেজদের বর্বরতা ছিল নির্মম৷ আপনারা ১৬৮ বছর আগের সেই বিদ্রোহ আর বীরত্বের ইতিহাস যেভাবে ধরে রেখেছেন, আগামীতেও এর ধারাবাহিক রক্ষা করতে হবে৷ 

সার্বজনীন প্রার্থনার মধ্যে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন খ্রিষ্টান ধর্ম যাজক মহামান্য কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি. রোজারিও৷ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা, সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নূরুল ইসলাম, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও ও নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার থাদেউস হেমব্রমসহ অনেকে৷ 

সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সাঁতাল হুল১৯ শতকে ব্রিটিশ ভারতে সংঘটিত একটি ঔপনিবেশিক ও জমিদারি শাসন-বিরোধী আন্দোলন, যাকে সাঁওতাল জনগোষ্ঠী নেতৃত্ব দিয়েছিল। এর সূচনা হয় ১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায়। 

ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার, মহাজন ও ইংরেজদের রাজস্ব ও কৃষি নীতির বিরুদ্ধে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলে। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন চার মুরমু ভাই- সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব। ১৭৯৩ সালে বড়লাট (গভর্নর-জেনারেল) লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে তাদের প্রাচীন স্থানান্তর চাষাবাদ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। তাই ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালরা বিদ্রোহ গড়ে তোলে।

 

বিএস/

আর্কাইভ