প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩, ০৫:৪৩ পিএম
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নানা রকম অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে জঙ্গি সম্পৃক্ততা, এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করতেও তারা ভয় পায় না। এবার ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে বাংলাদেশি পাসপোর্টও পেয়ে যাচ্ছেন রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমারের নাগরিক হয়েও তারা বিদেশ পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে। আর এ কাজে তাদের সহায়তা করছে একটি দালালচক্র। এই দালালচক্রটি পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি অফিসকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
সম্প্রতি একটি চক্রের ৭ জনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়ার দাবি পুলিশের। চক্রটি রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিত। বিনিময়ে তারা তৈরি করে দিত বিভিন্ন স্থানের ঠিকানা ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মসনদ ও পাসপোর্ট।
চক্রটির সঙ্গে ট্রাভেল এজেন্সিও জড়িত। পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের ট্রাভেল ভিসা করে দিত এজেন্সিটি। এরই মধ্যে তাদের মাধ্যমে অনেক রোহিঙ্গা পাসপোর্ট পেয়ে বিদেশে চলে গেছে।
ঢাকার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে তাদের প্রয়োজন হয় একটি জাতীয় পরিচয়পত্র। সেই জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে তৈরি করার একটি চক্র আছে। বেশকিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং পাসপোর্ট অফিসকেন্দ্রিক একটি চক্রের সন্ধান আমরা পেয়েছি আমরা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, রাজু এবং তার সহযোগী নূর একটি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী। ওই প্রতিষ্ঠানটি এ কাজের সমন্বয়টি করত। ভিসা প্রসেসিং এবং বাকি কাজগুলো তারা করে দিত। আরিফ ট্যুর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার হলিডে ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস নামে এমন আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সন্ধানও পেয়েছি। মানে এখানে ট্যুার অ্যান্ড ট্রাভেলসের সম্পৃক্ততা আছে।
তবে এই দালালচক্রের সঙ্গে নিশ্চিতভাবে নির্বাচন কমিশন, পাসপোর্ট অধিদফতর এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন জড়িত বলছেন বিশেষজ্ঞ।
এ বিষয়ে সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে এ ধরনের পাসপোর্ট তারা করিয়ে দেন। একেবারে জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া পর্যন্ত যতগুলো পর্যায় রয়েছে, সেই পর্যায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তির প্রত্যেকের কাছেই এই ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার ভাগবাটোয়ারাটা চলে যায়। অন্যথায় এটি তো হওয়ার কথা না।
কী পরিমাণ রোহিঙ্গা এরই মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই পুলিশের কাছে।
জেকেএস/