প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৩, ০৭:৪৬ পিএম
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অনেকেই প্রার্থী হতে পারেন— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে শত ফুল ফুটতে দিন। যে ফুলটি সবচেয়ে বেশি সুন্দর সে ফুলটিই বেছে নেয়া হবে।
বুধবার (২১ জুন) গনভবনে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন,
‘নির্বাচন আসলে অনেকেরই প্রার্থী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। নির্বাচন যখন হবে তখন কাকে প্রার্থী করা হবে, কাকে প্রার্থী করা হবে না এটা আমাদের দলের লক্ষ্য থাকে। শত ফুল ফুটতে দিন না, যে ফুলটি সবচেয়ে বেশি সুন্দর সে ফুলটিই আমি বেছে নেব।’
গণতন্ত্র প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, অনেক ত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশে গণতন্ত্র আছে, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হোক এটা আমাদেরও দাবি। আপনারা কি চান না দেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকুক।
তিনি আরও বলেন, ৭৫ পরবর্তী নির্বাচন বলতে কিছুই ছিল না। মানুষের ভোটের অধিকার বলতে কিছুই ছিল না। মানুষের সব অধিকার এক জায়গায় বন্দি ছিল।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন সময়মতোই হবে, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে।
সুইজারল্যান্ড সফরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,
রোহিঙ্গাদের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমাণ কমে যাওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধরে রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছি।
কাতার সফরে গুরুত্ব পায় জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি। এ ছাড়া ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ পরবর্তী সময়ে কর্মহীন হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের বিকল্প কর্মসংস্থানের বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন কাতারের আমির। চলতি বছর বাংলাদেশ সফরের বিষয়েও ইতিবাচক সাড়া দেন তিনি।
কাতারে সাম্প্রতিক দুটি সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
গত ১৩ জুন সকালে সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট।
পরদিন ১৪ জুন প্যালেস ডি নেশনসের বৈঠক কক্ষে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। এতে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
একই দিন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্যালেস ডি নেশনস-এ ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক সামিট-২০২৩’-এর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে জেনেভায় ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর আবাসস্থলের সভাকক্ষে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. ওকনজো ইওয়েলা। এতে ডব্লিউটিওর ডিজি মৎস্যখাতের ভর্তুকি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে জানান, তারা এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে।
এ সময় ডব্লিউটিওর ডিজি আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিতে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে কথা বলার সময় এ বিষয় তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান, যাতে এ বিরোধ নিষ্পত্তি সংস্থা সক্রিয় হয়। ডিজি বলেন, ‘এটি ডব্লিউটিওর মূল শক্তি।’
এর আগে, একই স্থানে কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সামিক আল মারি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কাতারের মন্ত্রী বলেন, তার দেশে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি জনশক্তি কাজ করছে। এসব শ্রমিকের কর্মক্ষমতা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট।
সফর শেষে শুক্রবার (১৭ জুন) রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এডিএস/