• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলার জন্য খুবই হুমকিস্বরূপ : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩, ০২:৩৪ এএম

রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলার জন্য খুবই হুমকিস্বরূপ : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গারা এ দেশে আশ্রয় নিয়েছে, তারা আইনশৃঙ্খলার জন্য খুবই হুমকিস্বরূপ। রোহিঙ্গারা আইনশৃঙ্খলা মানতে চায় না। তারা আশ্রিত, আমাদের দেশের আইন দিয়ে তাদের গ্রেপ্তারও করা যায় না, বিচারও করা যায় না। দেশে এ রকম কোনো আইন নেই। ফলে কিছু করাও যায় না আইনানুগভাবে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সভায় দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা করেছি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে এবং আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে জনগণ স্বস্তিতে আছে বলে আমাদের মূল্যায়ন। যদিও দেশে ছোটখাটো ঘটনা ঘটে, এটি স্বাভাবিক। এমন কোনো মেজর ঘটনা ঘটেনি যাতে উদ্বিগ্ন হতে হয়। আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে তারপরেও উদ্বিগ্ন, সেটি রোহিঙ্গাদের নিয়ে। সেখানে মাদক, নাশকতা ইত্যাদি বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমরা ওদেরকে আইডি কার্ড না দিলেও ওরা যেভাবেই হোক সিম কার্ড এনে ব্যবহার করে। আমাদের দেশ থেকে পাচ্ছে না কিন্তু মিয়ানমার থেকে সিম-কার্ড এনে সেগুলো ব্যবহার করে।

তিনি বলেন, আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার, মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গারা এদেশে আশ্রয় নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সদয় হয়ে আশ্রয় দিয়েছেন, তারা আইনশৃঙ্খলার জন্য খুবই হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেরা আইনশৃঙ্খলা মানতে চায় না। তাদের জন্য ভাসানচরে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে৷ সেখানে যে সুব্যবস্থা আছে সেখানেও তারা যাচ্ছে না। ওখানেই থাকবে। সেখানে বিভিন্ন স্থানীয় ক্রাইমের নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে এবং নিজেদের মধ্যেও মারামারি, হানাহানি, মাদক ইত্যাদি নিয়ে যেভাবে আছে মানবিক কারণে কিছু বলাও যায় না।  

মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক কিছু সংস্থা সেখানে আছে, আমরা মনে করি যাদের মদদে রোহিঙ্গারা উৎসাহ পায়। যাদের জন্য কথায় কথায় সেসব এনজিও বা আন্তর্জাতিক সংস্থা এমন সব কাজে জড়িত এদের জন্য এ দেশের আইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণও করা যাচ্ছে না। তারপরেও আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিজিবি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কীভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা যায়।

মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডোপ-টেস্টের মেয়াদ খুব অল্প। তিন দিন পরে গেলেই অর্থাৎ তিন দিন মাদক সেবন থেকে বিরত থাকলেই ডোপ-টেস্টে আর ধরা পড়বে না যে মাদকসেবী। তারপরেও ডোপ-টেস্টের মাধ্যমে কিছু মানুষের চাকরি চলে গেছে। পুলিশ বাহিনীর লোকই সবচেয়ে বেশি চাকরিচ্যুত হয়েছে।

মাদকসেবীদের নিরুৎসাহিত করার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন মাদকসেবীদের সংখ্যা আমাদের আশানুরূপ কমেনি, অনেকক্ষেত্রে বৃদ্ধি পেয়েছে। কীভাবে মোটিভেশন চালানো যায়, অভিভাবকদের সঙ্গে সমাবেশ করা, স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।

তিনি বলেন, মাদকসেবীদের নিরাময়-কেন্দ্র সরকারি-বেসরকারিভাবে রয়েছে, সেগুলো খুব একটা মানসম্পন্ন নয়। সরকারি নিরাময়-কেন্দ্রগুলোর আসন বৃদ্ধির জন্য সরকারিভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভাগীয় শহরে নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকারি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। মাদকের ক্ষেত্রে ব্যর্থতা থাকলেও জঙ্গি দমন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।  

মাদক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মাদক যেসব রুটে আসে তা বন্ধ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ সকলে তৎপর রয়েছে। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ২২ কেজি আইস নামে মাদক জব্দ করা হয়েছে। উদ্ধার যে হচ্ছে না তা কিন্তু না। এটা ঠিক যে নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বন্ধের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আজকে আরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, কোনো রুট দিয়ে যাতে মাদক ঢুকতে না পারে৷ 

 

জেকেএস/

আর্কাইভ