প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩, ০২:৪০ এএম
বিদেশি গ্রাহকদের পাশাপাশি দেশি গ্রাহকদের জন্যও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিল আয়োজিত ’লিভারেজিং লেসনস লার্নড টু মুভ ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান কমপ্লায়েন্স না মানলে বিদেশি গ্রাহকরা সহজে সেই পণ্য কিনতে চায় না। বিদেশি গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে কমপ্লায়েন্স মেনে চলছে, ঠিক দেশি গ্রাহকদের জন্য ফায়ার সেইফটি নানা কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা জরুরি।’
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত কমপ্লায়েন্স ও নিরাপত্তার দিকে অনেক ভালো করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সেরা ১০ টি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে ৮ টির অবস্থান এখন বাংলাদেশে। দেশের আরএমজি সেক্টরের কম্পায়েন্সের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানগুলো প্রশংসা করছে।’
তিনি আরও বলেন, যেসব পণ্য রফতানি হচ্ছে সেগুলোর কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা যেমন জরুরি; ঠিক একই ভাবে দেশীয় গ্রাহকদের জন্য যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পণ্য উৎপাদন করেন তাদেরও একইরকম কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যেমন সুরক্ষিত থাকে, ঠিক তেমনি ব্যবসায়ীরাও অগ্নিকাণ্ড বা বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যেতে পারে।
কলকারখানার নিরাপত্তা নিয়ে দেশের প্রধান বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের কাজ করার কথা নয় জানিয়ে জসিম উদ্দিন আরও বলেন, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কর্মীদের প্রাণহানীসহ ব্যবসায়ীদের যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় সেগুলো কাটিয়ে উঠতে ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
ইতোমধ্যে এই সেফটি কাউন্সিল ৫ হাজার ২০৬ টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে বলেও জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। তিনি বলেন, এর মধ্যে ১০০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে। এ সময় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিল্প মালিকদের কমপ্লায়েন্স মেনে চলার আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।
এদিকে পাঁচ হাজারের বেশি কারখানা পরিদর্শনের জন্য এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, পরিদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত কারখানাগুলোকে সংস্কারের ব্যবস্থা; এমনকি বন্ধ করার বিষয়েও পদক্ষেপ নেয়া হবে। পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোতে এনফোর্সমেন্ট আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীরা সুন্দরভাবে ব্যবসা করে আসছে দেখেই দেশ আজ এগোচ্ছে। ব্যবসায়ীদের হাত ধরেই ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হবে। তবে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেল তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি বলে জানান তিনি।
আর এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের প্রশিক্ষকরা নিজ নিজ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কারখানায় এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে ৭৯টি কারখানায় প্রায় ৩ হাজার কর্মী ও ১২৪টি কারখানায় সেইফটি কমিটি গঠন ও তাদের দায়িত্ব বিষয়ে ৩০টি কর্মশালায় ১ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সেইফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহিদুল্লাহ, এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী প্রমুখ।
এডিএস/