• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

সাড়ে ৮ হাজার টন দেশে আসতেই পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেক

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩, ০৬:৫৯ পিএম

সাড়ে ৮ হাজার টন দেশে আসতেই পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেক

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

তিন দিনে মোট ৮ হাজার ৩০০ টন ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে ঢুকেছে। এতে রাজধানীসহ সারা দেশের পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে নিত্যপণ্যটির দাম। আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ২০ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা পর্যায়ে এখনো সর্বোচ্চ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে পণ্যটি কিনতে ক্রেতাকে এখনো বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে।

বুধবার কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তিন দিনে মোট ৪ লাখ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৮ হাজার ৩০০ টন পেঁয়াজ দেশে এসেছে। আরও পেঁয়াজ স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। আর এর মধ্যেই প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে পণ্যটির দাম।

রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি আড়তের আমদানিকারক ও পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শংকর চন্দ্র দাস সিটি নিউজ ঢাকাকে বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসায় দাম হু হু করে কমতে শুরু করেছে। পাইকারি বাজারে বুধবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

তিনি জানান, আমদানি আদেশ আসবে এমন খবরে দেশের স্থলবন্দরের ওপারে ট্রাক অপেক্ষা করছিল। আদেশ দিতে দেরি হওয়ায় পেঁয়াজ ট্রাকে ছিল। গরমের কারণে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। তারপরও ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে আসায় পাইকারি বাজারে দাম কমেছে। কিন্তু সে অনুপাতে খুচরা বাজারে কমেনি।

এদিন রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। নয়াবাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. জামিল বলেন, এখনো খুচরা পর্যায়ে যারা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন তাদের সবার এই পণ্য বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন দামে কমে কিনতে পারলে কম দামেই বিক্রি করা হবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম আরও কমেছে। ভারতীয় আমদানিকৃত পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে দাম আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন পাইকারি বাজারে ভালোমানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে। আরও একটু নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকার কিছু বেশি দামে। তবে খুচরা বাজারে এখনো তেমন প্রভাব নেই। খুচরা বাজারে কয়েকদিনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে দাম কমবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

বুধবার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন পাইকারি আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারত থেকে আসা পেঁয়াজ সকাল থেকেই ট্রাকে ট্রাকে খাতুনগঞ্জের আড়তে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এছাড়া দেশীয় পেঁয়াজের বড় মজুত রয়েছে আড়তে। এই অবস্থায় পেঁয়াজের দামে বড় ধরনের ধস নেমেছে। বিকাল হতে হতে এই দাম আরও কমে যেতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। দেশীয় পেঁয়াজ এখন পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা দরে। তবে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম এখনো ৭০ টাকার বেশি।

এদিকে পেঁয়াজের বাজার এখনো পুরোপুরি চাঙ্গা হয়নি। পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা কমানোর পরও পেঁয়াজের ক্রেতা পাচ্ছেন না আড়তদাররা। অনেকটা স্থবির হয়ে আছে বেচাকেনা। ব্যবসায়ীদের মতে, বাজারে থাকা পেঁয়াজগুলোর কেনা দর অনেক বেশি। কিন্তু পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে আরও কমে যাবে। এ আতঙ্কে আড়তদাররা দাম কমিয়ে হলেও পেঁয়াজ বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ক্রেতারা আরও কমার আশায় আপাতত পেঁয়াজ কিনছেন না। কয়েকদিন পর আমদানিকৃত পেঁয়াজ বাজারে প্রবেশ করলে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এবং বাজারও চাঙ্গা হবে।

আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর থেকে পাবনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়ায় কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম পড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে খাতুনগঞ্জেও। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু হলে দাম আগের পর্যায়ে নেমে আসবে।

খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, আমদানি শুরু হওয়ায় পেঁয়াজের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ইতোমধ্যে ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ বেনাপোল ও হিলি স্থলবন্দর হয়ে চট্টগ্রামের বাজারে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে ব্যবসায়ীদের আড়তে পূর্বে মজুত থাকা পেঁয়াজ কেজিতে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে গেছে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ