• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দেশবাসীকে বৃক্ষ রোপণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩, ০৭:০৭ পিএম

দেশবাসীকে বৃক্ষ রোপণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বৃক্ষ রোপণ করতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবসে গণভবন প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ শেষে দেশবাসীর উদ্দেশে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করার পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। দেশ রক্ষা করতে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

‘পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা আমাদের কর্তব্য, আমাদের দেশটা আরও সুন্দর ও উন্নত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই ব্যাপকভাবে কর্মসূচি পালন করা  হচ্ছে,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৮৪ সালে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং ৮৫ সাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্দেশ দেয়া আছে যে, প্রতিবছর দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা ১ আষাঢ় থেকে তিনটি করে গাছ লাগাবেন। তার মধ্যে একটা বনজ, ফলজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর কথা বলা আছে। যেহেতু আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস, তাই দেশবাসীকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানাই।

বিশ্ব পরিস্থতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ বিশ্বব্যাপী যে মূল্যস্ফীতি, প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, খাদ্যমূল্যের দাম বেড়ে গেছে। অনেক উন্নত দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, আমাদের দেশের মানুষ যাতে তার থেকে রক্ষা পায়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে।’

এর আগে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৩ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান বৃক্ষমেলা ২০২৩-এর উদ্বোধন উপলক্ষে গণভবন প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা, ২০২৩’ উপলক্ষে রোববার (৪ জুন) এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণসহ প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ টেকসই পরিবেশ সংরক্ষণ, কার্বন আধার সৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে বৃক্ষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত। এ বছর জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য–‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ খুবই যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী হয়েছে।

এ বছর যারা ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন, ২০২২’, ‘বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার, ২০২১’ এবং যেসব উপকারভোগী সামাজিক বনায়নের লভ্যাংশ পেয়েছেন তাদের প্রাণঢালা অভিনন্দন জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার টেকসই বন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন বাড়ানোর জন্য সরকারি বনভূমিসহ প্রান্তিক ভূমিতে সামাজিক বনায়ন এবং উপকূলীয় এলাকায় নতুন জেগে ওঠা চরভূমিতে উপকূলীয় বনায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে, বন সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি দেশীয় স্থানোপযোগী প্রজাতির বনায়ন করে অবক্ষয়িত বন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছে। এভাবে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন ২৫ ভাগে উন্নীত করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন অপসারণ ও বন খাতের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য আমাদের সরকার কর্তৃক ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল রেড প্লাস স্ট্রাটেজি’ গ্রহণ করা হয়েছে।’

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সবুজ-শ্যামল এ বাংলাদেশ এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দেশকে আরও সবুজে আচ্ছাদিত করার লক্ষ্যে এ বছরও জাতীয় পর্যায়সহ সারা দেশে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হচ্ছে এবং তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উন্নত প্রজাতির বৃক্ষের সঙ্গে পরিচয় এবং চারা সংগ্রহের জন্য বৃক্ষমেলার আয়োজন সহায়ক হবে বলে আশা করি। তা ছাড়া বৃক্ষরোপণ অভিযানের মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মাঝে বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরে দেশবাসীকে বৃক্ষরোপণে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করা যাবে বলে মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আজীবন স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে প্রত্যেকে অন্তত একটি করে বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে তার যত্ন নেয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা নিরাপদ বাসযোগ্য আবাসভূমি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

তিনি ‘জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা, ২০২৩’-এর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।

 

জেকেএস/
 

আর্কাইভ