• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেছেন

মার্কিন ভিসা নীতিতে বস্ত্র ও পাটপণ্য পাঠাতে সমস্যা হবে না

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩, ০২:২৮ এএম

মার্কিন ভিসা নীতিতে বস্ত্র ও পাটপণ্য পাঠাতে সমস্যা হবে না

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, ‘মার্কিন ভিসা নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপিয়ান দেশে বস্ত্র ও পাটজাত পণ্য পাঠাতে কোন সমস্যা হবে না। কেননা এসব পণ্য আমদানি ও রফতানি করা হয় বেসরকারি পর্যায়ে এবং এটা ব্যবসায়িক ব্যাপার, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কোন ভূমিকা থাকে না।’

ফরিদপুরে ‘বহুমুখী পাট ও পাটজাত পণ্য মেলা’ উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। রোববার (০৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন তিনি। জেলা পাট অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ডলারের সংকটের জন্য আমরা কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আমাদের হাতে টাকা আছে, টাকা কোন সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে ডলারের কারণে।

আগে থেকে এ ব্যাপারে আমরা প্রস্তুতি কেন নেইনি-জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, তখন তারা বাকিতে কয়লা দিয়েছে, আমরা নিয়েছি। তবে যখন টাকা পরিশোধ করার সময় এসেছে তখন ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে জানতে চাওয়া  হলে কোন সুনির্দিষ্ট সময় উল্লেখ না করে মন্ত্রী বলেন, ‘অচিরেই সমস্যার সমাধান হবে।’

ডলার সংকটের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, আজ দেশে বিভিন্ন বিদেশি ফলে বাজার ভরে গেছে। অথচ আমাদের দেশে আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, কলার মতো অনেক সুস্বাদু দেশীয় ফল আছে। সেগুলি বাদ দিয়ে ডলার খরচ করে আমরা বিদেশ থেকে ফল আনছি, এটি ঠিক হচ্ছে না।

এর আগে মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, এক সময় আমাদের সবচেয়ে রফতানি পণ্য ছিল পাট।  আজ প্লাস্টিকের কারণে আমরা আমাদের ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশে বিশেষত ফরিদপুরে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মানের পাট উৎপাদন হয়। কিন্তু বিশ্ববাজারে আমরা ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছি। বিভিন্ন দেশের মেলায় গিয়ে দেখেছি যেখানে ভারতের ১০০টি পাটজাত পণ্যের স্টল রয়েছে সেখানে আমাদের ১০টি স্টলও নেই। এ ব্যবধান ১৫ কিংবা ১০ এর মধ্যে হওয়া উচিত ছিল।

তিনি বলেন, পাট পণ্য নিয়ে বিশ্ব বাজারে আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে।

পাট পণ্য উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর সঙ্গে দেশের চার কোটি লোক জড়িত। পাট পণ্যের সমাদর বাড়লে কৃষক দাম পাবে, উপকৃত হবে মানুষ। তিনি বলেন, চাল পাটের বস্তায় বাজারজাত করার জন্য আইন করা হয়েছে যাতে কেউ প্লাস্টিকের মোড়কে চাল বিক্রি করতে না পারে। এ আইন সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য তিনি পাট অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ফরিদপুরে পাটের আধুনিক পণ্যের উৎপাদনে একটি আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি পাট পচানোর জন্য হাজা মাজা পুকুর গুলির খনন করা হবে। তিনি ওই পুকুরে মাছ চাষে ইজারা না দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন।

সভাপতির বক্তব্যে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, মন্ত্রী পাট পণ্য আধুনিকায়নের জন্য যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করার আশ্বাস দিয়েছেন সে লক্ষ্যে  তিনি দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন  এবং আমরা তাকে (মন্ত্রী) দিয়ে এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে চাই।

উদ্বোধনী সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, অতিরিক্ত সচিব মো. মাহমুদ হোসেন, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক সেলিনা আক্তার। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আলেয়া বেগম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী মেলা উপলক্ষে আগত  ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের হাতে তৈরি পণ্যের ২১টি স্টল পরিদর্শন করেন।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ