প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩, ১২:৫৬ এএম
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আশঙ্কার কিছু নেই। বাঁশখালীতে উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে একটা ভালো পরিস্থিতির দিকে যাওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, মোটামুটি গুছিয়ে ফেলেছি।’
রোববার (৪ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন তিনি।
বেশ কিছুদিন ধরে লোডশেডিং বেড়ে গেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গ্যাস, কয়লা ও তেলের যোগান দিতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এ কারণে লোডশেডিংয়ের জায়গাটা ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। এখন যে সমস্যাটা দেখা দিচ্ছে, সেটা অনেক বড় হয়ে গেছে। আমি জানি, লোডশেডিংয়ের কারণে পরিস্থিতি অনেকটা অসহনীয় হয়ে গেছে।
‘এই সংকটের দ্রুত সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সমাধান চেষ্টা চলছে, কত দ্রুত পায়রাতে কয়লা নিয়ে আসা যায়। পাওয়ার প্ল্যান্টটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। বড় পুকুরিয়াতে আমাদের পাওয়ার প্ল্যান্টটি অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে। যে কারণে লিক্যুয়েড ফুয়েলের পাওয়ার প্ল্যান্টগুলোও অর্ধেক ক্যাপাসিটিতে চলছে’, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার আশাপাশসহ গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। আমরা সকাল থেকে মনিটর করছি। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। এই অবস্থা থেকে কীভাবে পরিত্রাণ পাওয়া যায়, সেই চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন সময়ের মধ্যেই যতদ্রুত সম্ভব এখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব।’
নসরুল হামিদ বলেন, ‘কারণ পাওয়ার প্ল্যান্টকে গ্যাস, কয়লা ও তেলের যোগান দিতে হচ্ছে। আবার শিল্পকেও গ্যাস দিতে হচ্ছে। সব পরিস্থিতি একসাথে এসেছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখছি, দাবদাহ বেড়ে গেছে। ৩৮ ডিগ্রির কাছাকাছি চলে গেছে, কোনো কোনো জায়গায় ৪১ ডিগ্রি হয়ে গেছে। যে কারণে পিকআওয়ারে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে যে পাওয়ার প্ল্যান্ট মজুত ছিল, আমরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে তা প্রস্তুত রেখেছিলাম। কিন্তু জ্বালানির অভাবের কারণে সেটা দিতে পারছি না। কিছুটা জায়গায় লোডশেডিং হচ্ছে। বিষয়টা হচ্ছে, আমাদের জ্বালানির ঘাটতি। কয়লা, গ্যাস ও তেলের ঘাটতি। আমরা ঠিকমতো যোগান দিতে পারছি না। সে কারণেই এই ঝামেলা হচ্ছে। তবে আমরা বলছি, এটা সাময়িক। এটা নিয়ে হতাশার কিছু নেই। এরইমধ্যে আমরা জ্বালানি যোগানের চেষ্টা করছি, আগামী এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা একটা ভালো পরিস্থিতিতে যেতে পারব।’
তবে ১০-১৫ দিন না, দুমাস আগে থেকেই এই পরিস্থিতি যাতে না ঘটে তা নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানালেন নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পরিস্থিতি আগে থেকেই সামাল দিতে হয়। এ রকম একটা পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে, তা আমরা জানতাম। সে বিষয়টি মাথায় নিয়েই আমরা সমাধানের চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু সার্বিকভাবে আমাদের অনেক কিছু দেখতে হয়।’
‘অর্থনৈতিক বিষয় যেমন রয়েছে, তেমন সময়মতো ঋণপত্র (এলসি) খোলার বিষয়টিও আছে। সময়মতো জ্বালানিও পেতে হবে। আশার বাণী হচ্ছে, আমরা লোডশেডিং সমস্যা সামাল দেয়ার একটি ব্যবস্থা করেছি। এ জন্য আমাদের এক-দুই সপ্তাহ কষ্ট করতে হবে,’ যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আড়াই হাজার মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হচ্ছে। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করছি। সেটা আমরা করতে পারব। পেট্রোলের অভাব নেই, আমরা যেটা চেষ্টা করছি, সেটা হচ্ছে ভারী জ্বালানি। প্রচুর গ্যাস দরকার আমাদের। আমরা গ্যাসের সর্বোচ্চ উৎপাদন করতে যাচ্ছি। যেটা উৎপাদন করছি, সেটা বিদ্যুৎ ও শিল্পে দিয়ে দিচ্ছি। চাহিদার পরিমাণ বেড়ে গেছে।’
জেকেএস/