প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩, ০৪:২১ পিএম
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লোডশেডিং তীব্র আকার ধারণ করেছে। রাতদিন মিলে গড়ে অন্তত ৮-৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। তীব্র গরমের মাঝে ঘনঘন লোডশেডিং হওয়ায় জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা আইপিএস এর দোকানে ভিড় করছেন।
ভুক্তভোগীরা জানায়, একদিকে জৈষ্ঠ্য মাসের কাঠফাটা গরম। অন্যদিকে বিদ্যুতের নিয়মিত লোডশেডিং। বিদ্যুৎ না থাকায় দিনের বেলায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে কাজ করা যাচ্ছে না। রাতে তীব্র গরমের কারণে ঘুমানো যাচ্ছে না। এতে শিশু-বৃদ্ধরা বিপাকে পড়েছে। এতে শরীর ঘেমে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন ভূঁইয়া নামে স্টেশনারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে লোডশেডিং, আমরা চরম খারাপ অবস্থায় আছি। দিনে দোকানে বসা যায় না। রাতে বাসায় থাকা যায় না। প্রতিদিন ৮-৯ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সরকার যেন বিদ্যুতের দিকে একটু নজর দেয়। সেই কামনা করি।’
লিটন বিশ্বাস নামে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কারেন্টের কথা বলে লাভ নাই। যে অবস্থা হয়েছে আমাদের এখন টিকে থাকা দায়। সারাদিনে দোকানে ২-৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সেই সঙ্গে তীব্র গরমে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। রাতে বাসায় গেলে ঘুমাতে পারি না গরমে। বিদ্যুতের দেখাই পাওয়া যায় না রাতে। আমরা খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।’
এদিকে নিয়মিত বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যাটারিচালিত আইপিএসের দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। ক্রেতারা বলছেন বাধ্য হয়েই তারা আইপিএস ক্রয় করতে এসেছেন।
মো. আমানুল্লাহ নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘দিনে রাতে বিদ্যুৎ না থাকা আর তীব্র গরমে আমাদের টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এখন টাকা ঋণ করে আইপিএস কিনতে এলাম। এছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।’
সাইদুর রহমান নামে আইপিএস বিক্রেতা বলেন, ‘গরমে মানুষের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। তার ওপর এখন যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। মানুষ উপায় না পেয়ে আইপিএস কেনার চেষ্টা করছে। গত কয়েকদিনে আমাদের দোকানে বেচাকেনা কিছুটা বেড়েছে।’
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহামুদের কাছে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সন্তোষ জনক উত্তর দিতে পারেন নি। তবে তিনি জানান, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হওয়ার ফলে গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিং বেশি করা হচ্ছে। তবে অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্যে বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা করছে।
তিনি আরও জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিক্রয় বিতরণ বিভাগ-২ এর আওতায় মোট ৪৩ হাজার গ্রাহক রয়েছে। তাদের জন্য মোট ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১০ থেকে ১২ মেগাওয়াট। বাকিটা ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
এডিএস/