নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
টিকা নেয়া করোনা রোগীদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ। শুধু করোনা নয়, অন্য যেকোনো রোগে আক্রান্ত হলেও তাদের বিকল্প অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে না।
টিকা নেয়ার ফলে শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী হয়। যার ফলে তারা এই সুফল পাচ্ছেন বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) একদল গবেষক।
সম্প্রতি চট্টগ্রামে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি না মানার পাশাপাশি অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ভ্যাকসিনের কারণে ইমিউনিটি সিস্টেম শক্তিশালী হওয়ায় বিকল্প অক্সিজেনের যেমন প্রয়োজন হয়নি তেমনি হাসপাতালেও যেতে হয়নি তাদের।
গত ২২ এপ্রিল থেকে টানা দেড় মাস প্রায় ১৩ হাজার স্যাম্পল এবং ১ হাজার ৯৫ জন পজিটিভ রোগী নিয়ে গবেষণা চালান সাত সদস্যের গবেষক দল। মূলত ভ্যাকসিন নেয়ার পরও করোনা আক্রান্তদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
সিভাসু কোভিড ল্যাবের ডা. তানভীর আহমদ নিজামী বলেন, যতগুলো পজিটিভ রোগী আমরা পেয়েছি, তাদের কন্ট্রাক ট্রেসিং করা হয়। গবেষণা করে একটা আউটপুট বের করা হয়।
সিভাসু কোভিড ল্যাবের ডা. প্রনেশ দত্ত বলেন, যারা ভ্যাকসিন নেননি তাদের করোনার আক্রান্তের ধরন বা সাইন সিম্টম বের করে তারতম্য করা হয়েছে।
একই ল্যাবের ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভ্যাকসিন নেয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও তাদের হাসপাতালে যেতে হয়েছে কিনা, অক্সিজেন নিতে হয়েছে কিনা সেগুলো গবেষণা করা হয়েছে এখানে।
গবেষণায় দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৯৬৮ জন কোনো রকম ভ্যাকসিন গ্রহণ করেনি। এর মধ্যে ১৩৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে আক্রান্তদের মধ্যে দশমিক ৪-৮ শতাংশ হিসাবে ৬৩ জন প্রথম ডোজ এবং দশমিক ৫ শতাংশ হিসাবে ৬৪ জন দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ৭ জন ও দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারী ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হলেও কোনো রকম গুরুতর উপসর্গ যেমন ছিল না তেমনি বিকল্প অক্সিজেনেরও প্রয়োজন হয়নি তাদের।
সিভাসুর উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, যারা ভাকসিন নেননি তাদের মধ্যে ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে যারা রয়েছে তাদের মৃত্যুর হারও বেশি। আর যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের কোনো অক্সিজেন লাগেনি, কিছুই লাগেনি। তারা ভয়ে গিয়েছিল এবং তারা ফেরত এসেছেন হাসপাতাল থেকে।
গবেষকদের মতে, দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণকারী আক্রান্তদের সবার বয়স ৫০ বছরের বেশি। এদের সবাই ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যাজমায় আক্রান্ত ছিলেন। এ ছাড়া তারা স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে পালন করেনি বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সিভাসু কোভিড ল্যাবের ড. ইফতেখার আহমদ রানা বলেন, বয়স বেশি হলেও যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন অবশ্যই তাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
ইতোমধ্যে করোনার নতুন ১৮টি জীবন রহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি প্রথম ভ্যাকসিন নেয়ার পরও আক্রান্ত হওয়া নিয়ে গবেষণা শেষ করেছেন সিভাসুর গবেষকেরা।
সবুজ/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন