নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
'স্যার আমি গরিব মানুষ। রিজিকের কসম স্যার। আমি টাকা ইনকাম করতে বের হই নাই। আমার গাড়ি নষ্ট ছিল, আমি গাড়ি ঠিক করতে বের হইছিলাম। আমারে শাস্তি দিয়েন না। আপনারা আমার মুরুব্বি। আমি গরিব মানুষ স্যার, আমার গায়ের কাপড় দেইখাও বোঝেন না!'
ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গাবতলী ব্রিজের মুখে পুলিশি চেকপোস্টে আটকা পড়েন মো. মিজান নামের এক মাইক্রোবাস ড্রাইভার। আদেশ অমান্য করে বের হওয়ার কারনে এই চালকের গাড়ি ডাম্পিংয়ের নির্দেশ দেন দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট। সেই পুলিশ কর্তার প্রতি হাত জোর করে পায়ের জুতো খুলে নতজানু হয়ে এমন আকুতি জানান এই মাইক্রোচালক।
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের প্রথম দিনে সকাল সারে ৯টায় রাজধানীর প্রবেশমুখ গাবতলী এলাকার পুলিশি চেকপোস্টে এমন চিত্র দেখা যায়! এ সময় ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, আপনি জানেন না আজ থেকে লকডাউন চলে? লকডাউনের মধ্যে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হতে পারবে না।
প্রতিউত্তরে চালক মিজান আবারও নতজানু হয়ে কড়জোড়ে বলেন, স্যার, আমারে মাফ কইরা দেন স্যার!
এরপরে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ তাকে পাশে রাখা গাড়ির কাছে নিয়ে যান এবং গাড়ির অন্যান্য কাগজপত্র চেক করতে থাকেন।
এ সময় মিজানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিন দিন আগে আমরা সাভার জাহাঙ্গির নগর এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হই। সেখানেই গাড়িটা আটকা থাকে এবং গাড়ির কিছু যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট অবস্থায় গাড়ি ফেলে রাখলে আরও ক্ষতি হতে পারে। তাই আজকে বিধিনিষেধের মধ্যেও বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি হাজারীবাগ গ্যারেজের উদ্দেশ্যে। জানি এটা অন্যায় হয়েছে, কিন্তু স্যারেরা যদি দয়া না করেন তাহলে আমার বাঁচার উপায় নাই!
এদিকে কঠোর বিধিনিষেধের প্রথম দিনে সকালে ঢাকার রাস্তায় জরুরি পরিষেবার আওতার বাইরে যানবহন খুব কম দেখা গেছে। সড়কে সাধারণ যাত্রীদের জন্য একমাত্র বাহন হলো রিকশা। কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রো চলাচল করতে দেখা গেলেও সেগুলো প্রত্যেকটি চেকপোস্টে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়েছে। এ ছাড়া গাবতলী চেকপোস্টে ঢাকায় বাইরে থেকে আসা সকল যানবাহনগুলো কড়া পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে।
সাগর/সবুজ/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন