প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২৩, ০১:০১ এএম
জ্বালানির বাজারে সৃষ্ট সংকট নিরসনে এবং শিল্প উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে আরও বেশি জ্বালানি সংগ্রহে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি জানান, কাতার ও ব্রুনাই থেকে আরও জ্বালানি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
সোমবার (২২ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গেল দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো কাতার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা জানি, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রফতানির বিষয়ে তিনি একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। হয়তো, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
এ প্রস্তাব নিয়ে আপনারা কতটা আশাবাদী- জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, আমরা জ্বালানি নির্ভরশীল দেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব জ্বালানি সংকটে পড়েছে। আর কাতার হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় জ্বালানি রফতানিকারক দেশ।
‘আমরা সর্বশেষ তাদের সঙ্গে যখন আলাপ করেছি, তখন তাদের থেকে কোটাভিত্তিক জ্বালানি সংগ্রহ করি। আমরা আরও চেয়েছি। কিন্তু ইউরোপীয়রা বেশি চাইছে। তখন জ্বালানির ক্ষেত্রে তারা লংটার্ম কনট্যাক্টে যাচ্ছে। যেটা জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ভালো বলতে পারবেন,’ যোগ করেন আব্দুল মোমেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রীয় চুক্তি হয়। আমাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কাতার বলেছিল, তারা বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। তাদের কাছ থেকে যাতে আরও জ্বালানি পাই, সে জন্য অনুরোধ করেছি। তারা যে আমাদের সঙ্গে আলাপ করতে রাজি হয়েছে, এটি একটি ভালো দিক।’
এছাড়া ব্রুনাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জ্বালানি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রনাইয়ের সরবরাহ কম। আর একবার যদি কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক হয়েই যায়... আমরা তাদের থেকে আরও জ্বালানি চাইবো। কাতার খুবই প্রভাবশালী একটি দেশ। আর তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকলে আমাদের প্রবাসীদেরও উপকার হবে। আমরা কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, আমরা খুবই খুশি যে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি খুবই সম্মানের সঙ্গে আমাদের দাওয়াত দিয়েছেন।
কাতারের সঙ্গে গেল মার্চে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে বাংলাদেশের। সেই চুক্তির অধীন ১ হাজার ১২৯ জন সেনা সদস্য দেশটিতে কাজ করবেন।
কাতারের আমিরের সঙ্গে যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে; সেখানে এ বিষয়ে আলোচনা করা যাবে কি না; জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অবশ্যই ভালো সুযোগ। এরইমধ্যে কুয়েতে আমাদের কয়েক হাজার সেনা সদস্য রয়েছেন। এসব দেশে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা থাকলে এর বিনিময়ে টাকা দেবে। আমাদের মধ্যে সম্পর্ক বাড়বে। আমাদের এক্সপার্টিজ আছে, রিসোর্স আছে, চাইলে সেগুলো আমার শেয়ার করতে পারি। সম্পর্ক ভালো হওয়ায় নতুন নতুন সুযোগ আসছে।’
নিষেধাজ্ঞা দেয়া দেশ থেকে আমরা কিছু কিনবো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন তিনি এমন কথা বলছেন, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা অনেক কথা বলেন। যাতে অন্যদের জন্য সতর্কবাণী থাকে। আক্ষরিক অর্থে সেটিকে কীভাবে নেবেন, তা আমি বলতে পারবো না। আমরা এখন ফেলে দেয়ার দেশ না, আগের মতো দারিদ্র্যক্লিষ্ট না, আমরা বিজয়ী দেশ। কাজেই কেউ চোখ রাঙিয়ে তাকালে আমরা যে ভড়কে যাবো, তা কিন্তু না।’
জেকেএস/