• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

দর্শনায় আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ, ভোগান্তিতে মানুষ

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৩, ০৫:৫২ পিএম

দর্শনায় আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ, ভোগান্তিতে মানুষ

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে জেলার ওপর দিয়ে মৈত্রী ট্রেনটি চলাচল করলেও চোখে দেখা ছাড়া ভ্রমণ করার সুযোগ নেই। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার মানুষ।

জানা গেছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২০০৮ সাল থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল শুরু করে। ট্রেন দুটি উভয় দেশের নাগরিকদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অল্প সময়ে অল্প খরচে ঢাকা-কলকাতা আসা-যাওয়া সহজ হচ্ছে। পাসপোর্টধারী যাত্রীরা ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসাসহ নানা কাজে ভারতে যাওয়া-আসা করেন।

তবে হঠাৎ করেই চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে বন্ধ হয়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম। চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এ অঞ্চলের মানুষজনকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দর্শনা থেকে খুব সহজে ওঠানামা করতে পারতেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে ট্রেনটি চলাচল করলেও চোখে দেখা ছাড়া ভ্রমণ করার সুযোগ নেই। দৃশ্যমান সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত মানুষ। সপ্তাহে ৬ দিন চলাচল করে ট্রেনটি। ২০১৭ সালে বন্ধ হয়ে যায় দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে ইমিগ্রেশন। দর্শনায় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটির ইমিগ্রেশন, যাত্রী ওঠানামাসহ ৬ দফা দাবিতে দর্শনার জন্য আমরা নামের সংগঠনটি বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। দর্শনায় ৬ বছর বন্ধ রয়েছে ইমিগ্রেশন।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মির্জা কামরুল হক জানান, ২০০৮ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ভারতের মধ্য মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু হয়। পাসপোর্টধারী যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই উভয় দেশের সরকার ট্রেনটি চালু করে। ভারতের কলকাতায় যাতায়াতকারী বাংলাদেশের নাগরিকরা ট্রেনটির সুবিধা ভোগ করেন। মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল শুরুর পর থেকে এ এলাকার মানুষ সহজে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশন থেকে যাতায়াত করতে পারত। ২০১৭ সাল থেকে দর্শনায় বন্ধ হয়ে যায় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম।

করোনাকালীন ২০২০ সালের ১৫ মার্চ উভয় দেশের মধ্য চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবার বাংলাদেশ ভারতের মধ্য মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২০২২ সালের ২৯ মে চলাচল শুরু করে। যাত্রীসেবার মান ভালো হওয়ায় উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সহজে যাতায়াত করেন। চিকিৎসা, ভ্রমণ, ব্যবসাসহ নানা কাজে আসা-যাওয়া করেন দুই দেশের নাগরিকরা। বাংলাদেশ, ভারত, আমেরিকা, নেপাল ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা চলাচল করেন।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আকন্দবাড়িয়া গ্রামের মনিরুজ্জামান ধিরু বাউল বলেন, দর্শনায় ট্রেনটি ইমিগ্রেশন থাকায় সহজে ভারতে যেতে পারতাম। এখন চেকপোস্ট দিয়ে যেতে হয়। কষ্ট আর ভোগান্তি নিত্যদিনের সাথি। দ্রুত সময়ে দর্শনায় যাত্রী ওঠানামা শুরু হোক। এখন মৈত্রী ট্রেনটি শুধু চোখে দেখতে হয়, চড়ার সাধ থাকলেও পারি না।

মেহেরপুর জেলার আমঝুপি গ্রামের সাদ আহমেদ বলেন, চিকিৎসার কাজে নিয়মিত ভারতে যেতে হয়। প্রথম দিকে দর্শনা থেকে ট্রেনে যাওয়া আসা করতাম। বন্ধ থাকায় সমস্যা হচ্ছে। তাড়াতাড়ি চালু করা হোক দর্শনায় ইমিগ্রেশন।

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বাসিন্দা শারমিন খাতুন জানান, পরিবার নিয়ে ভারতে প্রায় বেড়াতে যায়। বেনাপোল দিয়ে যাতায়াত করতে কষ্ট হয় অনেক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। দর্শনা থেকে ট্রেনে করে ভারতে যেতে পারলে অনেক সুবিধা হয়।

প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ছাড়া ৬ দিন দুই দেশের মধ্যে চলাচল করে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনটি। ঢাকা থেকে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনে অল্প সময় বিরতি দিয়ে জয়নগর দিয়ে গেদে হয়ে ভারতের অংশে প্রবেশ করে কলকাতায় যায়।

মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে আসন রয়েছে ৪৫৬টি। ১৪৪টি এসি কেবিন ও ৩১২টি এসি চেয়ার আসন রয়েছে।

রোববার (২১ মে) সকালে বাংলাদেশের ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রী ছিলেন ৩৮৭ জন। বাংলাদেশি ৩৬৬ ও ভারতীয় ২১ যাত্রী ছিলেন ট্রেনটিতে।

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক আরও বলেন, ট্রেনটি স্টেশনে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কোনো যাত্রীর স্টেশনে নামার সুযোগ নেই। বাইরে লোকজনের প্রবেশ সে সময় নিষেধ থাকে। নিরাপত্তাসহ সব সুযোগ-সুবিধা ভালো হওয়ায় এ ট্রেনের চাহিদা যাত্রীদের কাছে বেশি।

 

জেকেএস/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ