• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
বিজিএমইএ প্রস্তাব দিয়েছে

আসন্ন বাজেটে সোলার প্যানেলের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক বাতিলের

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৩, ০৭:১৪ পিএম

আসন্ন বাজেটে সোলার প্যানেলের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক বাতিলের

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

চলমান বিদ্যুৎ সংকটের শিল্প কাখানার উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প বিদ্যুৎ হিসেবে সোলার সিস্টেমের সম্ভাবনা ব্যাপক। অথচ এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্কারোপসহ নানামুখী সমস্যায় মুখে কারখানাগুলো। এ অবস্থায় আসন্ন বাজেটে সোলার প্যানেলসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।

চট্টগ্রামের মোহরা শিল্পাঞ্চলের সনেট গার্মেন্টসের কারখানার সিংহভাগ বিদ্যুৎ সোলার সিস্টেম থেকেই সরবরাহ হচ্ছে। সৌরবিদ্যুৎ থেকেই এই কারখানার লাইট-ফ্যান-শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র এবং সুইং মেশিনের পাশাপাশি কাটিং বিভাগ চলছে। এমনকি ডায়িং বিভাগসহ অন্য সব ধরনের পণ্য উৎপাদনে সহযোগিতা করছে সৌরবিদ্যুৎ।

এক বছর আগে এক কোটি টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠানটি তাদের কারখানার ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করেছিল। এখন কারখানার অন্তত ৬০ শতাংশ বিদ্যুতের জোগান এই উৎস থেকে আসছে।

এ বিষয়ে সনেট গার্মেন্টসের সোলার মেইনটেন্যান্স বিভাগ প্রসেনজিৎ দত্ত বলেন, এখন যেহেতু লোডশেডিং বাড়তি, সেহেতু ন্যাশনাল গ্রিডের ওপর নির্ভর না করে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে আমরা কারখানা চালাতে পারছি।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম ইপিজেডের কয়েকটি কারখানাও পরীক্ষামূলকভাবে এক বছর আগে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার শুরু করেছিল। কিন্তু বিকল্প বিদ্যুতের এই পদ্ধতি অতিরিক্ত শুল্কাহারের কারণে বেশি দূর এগোতে পারছে না। তা ছাড়া বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী, পরিবেশবান্ধব গ্রিন কারখানা গড়ে তুলতে মন্ত্রণালয়গুলো থেকে কার্যকর সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

নিট গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) পরিচালক গাজী মোহাম্মদ শহীদ উল্লাহ বলেন, ‘সোলার সিস্টেম চালু করার জন্য তো শুধু ইনভার্টার ও প্যানেল দরকার হয় না। এ ছাড়া অনেক কিছুরই প্রয়োজন হয়। আর এসব প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্টের শুল্কহার ৩০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত।’

সোলার প্যানেলগুলো যদি ডিউটি ফ্রি করে এনে দেয়া হয়, তা হলে অনেক কারখানা মালিকই উদ্বুদ্ধ হয়ে এই সোলার সিস্টেম চালু করবে বলে মনে করেন বিজিএমইএর সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী।

বিশেষ করে, এখনো সোলার প্যানেলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে ৩০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সোলার প্যানেলের পাশাপাশি গার্মেন্টস কারখানার অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক বাতিলের দাবি জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বাজেট প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে বিজিএমইএ। এ বিষয়ে সংগঠনটির প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ফায়ার, সেফটি ও ইলেকট্রিক সেফটি ডিভাইসগুলো যাতে আমাদের জন্য ডিউটি ফ্রি রাখা হয় এই প্রস্তবনা দেয়া হয়েছে। এমনটা হলে ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন হবে।  


মাত্র এক কোটি ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে সোলার প্যানেল থেকে প্রতিদিন ১ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। সে সঙ্গে সোলার প্যানেল এবং ইনভার্টারের কর্মক্ষমতা থাকছে অন্তত ২৫ বছর। দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর ছাদসহ অবকাঠামোগত ‍সুযোগ-সুবিধার কারণে সোলার প্যানেল বসালে ৪০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব। অথচ হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সেই সুবিধা ভোগ করছে। নানা জটিলতায় বাকিরা এর আওতায় আসতে পারছে না। এই ক্ষেত্রে চলতি বাজেট অধিবেশনে সোলার প্যানেলের ওপর শুল্কহার প্রত্যাহার করা হলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মডেল হয়ে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।

 

জেকেএস/
 

আর্কাইভ