• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও জিতবে, জানালো গুগলের এআই

প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৩, ০২:৩৫ এএম

আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবারও জিতবে, জানালো গুগলের এআই

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবারও জিতবে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী করেছে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) চ্যাটবট বার্ড। চ্যাটবটটি বলেছে, বাংলাদেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো আবারও জিততে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে কোন দলের জয়ের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি- এমন এক প্রশ্নের জবাবে বার্ড বলেছে, ‘বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং দলটি ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনেও জয়ী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের বাঙালি জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় দলটি ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায়। আওয়ামী লীগকে উন্নয়নের দল হিসেবেও বিবেচনা করা হয় এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলটির নেতৃত্বে দেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।’  

বার্ড আগামী নির্বাচনে বিএনপিকেই আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলে উল্লেখ করেছে। গুগলের চ্যাটবটটি এ বিষয়ে বলেছে, ‘প্রধান বিরোধীদল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২০২৩ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০০৯ সাল থেকে বিরোধীদলে থাকা বিএনপি অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং দুর্নীতির অভিযোগে বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে তারপরও বিএনপি এখনও বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে সংখ্যালঘিষ্ঠ উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে।’  

আগামী নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও আওয়ামী লীগই স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে বলে জানিয়েছে বার্ড। গুগলের এই চ্যাটবটটি বলেছে, ‘ধারনা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালের নির্বাচন বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, তবে আওয়ামী লীগই ফেভারিট। দক্ষভাবে সরকার পরিচালনার অতীত অভিজ্ঞতা রয়েছে আওয়ামী লীগের এবং দলটিকে উন্নয়নের পক্ষের দল বলেই বিবেচনা করা হয়।’

চ্যাটবটটি পরবর্তী নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে যেসব বিষয় তা নিয়েও ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। বার্ডের মতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, দুই প্রধান নেত্রীর জনপ্রিয়তা এবং ভোটদানের হার আগামী নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত করতে বড় ভূমিকা রাখবে।

বার্ডের ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে, যা আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনতে পারে। তবে কোনো কারণে যদি অর্থনীতির গতিপ্রকৃতি বদলে নিম্নগামী হয় তবে তা আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।

নির্বাচনে দুই দলের প্রধান নেত্রী- আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা এবং বিএনপির খালেদা জিয়া- ফলাফল প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন বলেও উল্লেখ করেছে বার্ড। চ্যাটবটটি বলেছে, ‘বর্তমানে হাসিনা খালেদা জিয়ার চেয়ে বেশি জনপ্রিয়। তবে খালেদা জিয়া তার দলকে আবারও সংগঠিত করতে পারলে তার জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে।’  

বার্ডের মতে নির্বাচনে ভোটদানের হার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হতে পারে। বার্ডের মতে, বাংলাদেশের নির্বাচনগুলোতে ভোটদানের হার অল্পই দেখা গেছে অতীতে। তবে ভোটদানের হার যদি বাড়ে তবে তা আওয়ামী লীগের পক্ষে যেতে পারে।  

‘সবমিলিয়ে বলা যায়, ২০২৩ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই স্পষ্ট ফেভারিট। তবে বিএনপিও জয়ী হতে পারে, যদি দলটি নিজেদের সংগঠিত করে হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে পারে।’-যোগ করেছে গুগলের চ্যাটবট।

বার্ড শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির বিষয়েও আলোকপাত করেছে। চ্যাটবটটি জানিয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০১৮ সালের মে মাসে নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। এর মধ্যদিয়ে দেশটি মর্যাদাপূর্ণ এলিট স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য হয়। বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশেরই নিজস্ব স্যাটেলাইট রয়েছে। 

চ্যাটবটটি আরও জানিয়েছে, গত বছরের জুন মাসে নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ এক অনন্য ইতিহাস গড়েছে। অনেকে এই প্রকল্প নিয়ে তামাশা করেছিল, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়া এই সেতু নির্মাণ অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার বিশ্বের অন্যতম স্রোতস্বতী নদীর উপর সফলতার সঙ্গে পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছে। এরপর, সে বছরেরই ডিসেম্বর মাসে শেখ হাসিনা দেশের প্রথম মেট্রোরেলেরও উদ্বোধন করেছেন।

গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বার্ডের এই ভবিষ্যদ্বাণী গত মার্চে প্রকাশিত মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে করা ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে মিলে যায়। ব্লুমবার্গের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, শেখ হাসিনা আগামী নির্বাচন জিতে টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।  

ব্লুমবার্গের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, করোনা মহামারির সময়ও বাংলাদেশের অর্থনীতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দারুণ এগিয়ে গেছে এবং প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক রাজনীতিও ভালোমতো সামলেছে শেখ হাসিনার সরকার এবং এর মধ্যেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে। 


বিষয়টি মূল্যায়ন করতে গিয়ে উইলসন সেন্টারের সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছিলেন, ‘শাসক দল যদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে, তাহলে তা সরকারের বিরুদ্ধে জনমনে থাকা ক্ষোভ থামিয়ে দিতে পারে এবং হাসিনার অবশ্যই এটা (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এগিয়ে নেয়ার) করার বিশ্বাসযোগ্য সক্ষমতা রয়েছে।’

 

জেকেএস/

আর্কাইভ