প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৩, ০৬:৪৬ পিএম
বোরো সংগ্রহ মৌসুমে সরকারিভাবে ধান, চাল ও গম কেনায় ১৯টি নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৭ মে) মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্টদের এসব নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, ৪ লাখ টন ধান ও সাড়ে ১২ লাখ টন সেদ্ধ চাল এবং এক লাখ টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় উপজেলাভিত্তিক বিভাজন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ধান, চাল ও গম সংগ্রহ সফল করার জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনা প্রদান করা হলো:
১. ধান ও গম সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবিলম্বে জেলা ও উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভা শেষ করতে হবে। কৃষকের অ্যাপবহির্ভূত উপজেলায় লটারি করে ধান সংগ্রহ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে। কৃষকের অ্যাপভুক্ত উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করে সিস্টেমে লটারি করে কৃষক নির্বাচনপূর্বক দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে হবে।
২. ধান ও গম সংগ্রহের বার্তাটি মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় কেবল টিভি স্কুলে প্রদর্শনের মাধ্যমে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. চলমান চাল সংগ্রহ মৌসুমে মিলের পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা অপেক্ষা বরাদ্দ কম হওয়ায় ৩০ জুনের মধ্যে ৬০ শতাংশ, জুলাইয়ের মধ্যে ৮০ শতাংশ এবং আগস্টের মধ্যে ১০০ শতাংশ চাল সংগ্রহ শেষ করার জন্য (তারিখ, পরিমাণ, সময়ভিত্তিক শিডিউল প্রস্তুতপূর্বক) জেলা, উপজেলা ও গুদামভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি করে সে অনুযায়ী সংগ্রহ শেষ করতে হবে।
৪. ১৮ মের মধ্যে চাল সংগ্রহের জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। চুক্তি হওয়ার পরপরই মিলারদের অনুকূলে চুক্তির পরিমাণ চালের বরাদ্দপত্র ইস্যু করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুলিপি দেওয়াপূর্বক স্ব স্ব জেলার ওয়েব পোর্টালে প্রকাশ করতে হবে।
৫. চুক্তিযোগ্য যেসব মিল মালিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চুক্তি করবেন না অথবা চুক্তি করে কোনো চাল সরবরাহ করবেন না, এমন মিল মালিকদের বিরুদ্ধে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০১২ এবং অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭-এর আওতায় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. গত আমন সংগ্রহ, ২০২২-২৩ মৌসুমে যেসব মিল চুক্তিযোগ্য ছিল, কিন্তু চুক্তি করেনি সেসব মিল চলতি (২০২৩) বোরো মৌসুমে চুক্তি থেকে বিরত থাকবে।
৭. ধান, চাল ও গম সংগ্রহ কার্যক্রম যুগপৎভাবে বাস্তবায়ন ও ত্বরান্বিত করতে হবে।
৮. মাঠপর্যায়ে চাল সরবরাহে ব্যর্থ মিল মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে, তার অনুলিপি সংগ্রহ ও সরবরাহ অনুবিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয়কে প্রেরণ করতে হবে।
৯. ধান, চাল ও গম সংগ্রহের জন্য অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭ অনুসারে ২০২৩ সালে উৎপাদিত বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। এর ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১০. হাস্কিং মিলারদের ক্ষেত্রে চুক্তি করা চাল সর্টিং করে সংগ্রহ করতে হবে।
১১. খাদ্য গুদামে কৃষকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক যেন কোনোক্রমেই হয়রানির শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
১২. গুদামে স্থান সংকুলান না হলে চলাচল সূচি প্রণয়ন নীতিমালা, ২০০৮ অনুসারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তর স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে বিধি অনুযায়ী স্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চলাচল সূচি জারি করবেন।
১৩. কোনো কেন্দ্রে খালি বস্তার স্বল্পতা দেখা দিলে স্ব স্ব অধিক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বয়পূর্বক বস্তা সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. সংগৃহীত চালের প্রতিটি বস্তায় সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী স্টেনসিল দেয়া নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. সংগ্রহ ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রক সর্বদা সর্বোচ্চ তৎপর ও সতর্ক থাকবেন।
১৬. অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের শুরু থেকেই চাল ও গমের প্রতিটি থামাল ১৩০-১৩৫ টন এবং ধানের ক্ষেত্রে ৮৫-৯০ টন করে গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে নিয়মিতভাবে খামালগুলো পরিচর্যা ও রুটিন মাফিক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১৭. প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে সব আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে ধান, চাল ও গম সংগ্রহের তথ্য ই-মেইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগে পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে।
১৮. জাতীয়ভাবে ৭ মে একযোগে সারা দেশে ৮ বিভাগে ধান, চাল ও গম সংগ্রহের শুভ উদ্বোধন করায় স্থানীয়ভাবে পুনরায় কোনো আনুষ্ঠানিকতার অজুহাতে কোনোক্রমেই সংগ্রহ কার্যক্রম বিলম্বিত করা যাবে না।
১৯। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ২ মের ৭১ নম্বর স্মারক ও ৩ মের ৭৩ নম্বর স্মারকের নির্দেশনা অনুযায়ী জিংকসমৃদ্ধ ধান ও চাল সংগ্রহ করতে হবে। সংগ্রহ করা জিংকসমৃদ্ধ ধান ও চালের পৃথক থামাল গঠন করতে হবে।
জেকেএস/