প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩, ১২:৪২ এএম
বেসরকারি খাতে চাকুরিজীবীদের বেতন বাড়ানো, মহার্ঘ ভাতা বা অন্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সরকারের দেখভালের বিষয় নয় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এটি বেসরকারি খাতের বিষয়। তারপরও করোনাকালীন বেসরকারিখাতকে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি। তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা ভর্তুকি পর্যন্ত দিয়েছি।
সোমবার (১৫ মে) বিকেলে ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ সদস্য ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারী চাকুরীজীবীদের মহার্ঘ ভাতা বলে কিছু নেই। মূল্যস্ফীতি যত বাড়বে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা একটি পার্সেন্টেজে বেতন বাড়াই। তাছাড়া আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধাও দিচ্ছি। বৈশাখী ভাতা থেকে শুরু করে নানা ধরনের ভাতা, ফ্ল্যাট কেনার জন্য লোন, গাড়ি কেনার লোন। মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কোনো প্ল্যান নেই। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রয়ক্ষমতার কথা হিসাব করে বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সরকারের আরও কোনো পরিকল্পনা আছে কি না- এ প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, যারা কোভিডের কারণে পরীক্ষা দিতে পারেনি বা নির্বাচনী পরীক্ষায় আসতে পারেনি, তাদের ক্ষেত্রবিশেষে শিথিল করা হয়েছে। এটা হয়েও গেছে।
ডিজিটাল ইকোনমিতে দেশ ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। রিজার্ভ নিয়ে দেশে তেমন কোনো সংকট নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো ডলার যেন আমাদের হাতে থাকে, সেটা নিয়েই আমাদের চিন্তা। তবে আমরা সবসময় রিজার্ভ ধরে রাখার চেষ্টা করি। এটা নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। আমাদের জমি আছে আমরা নিজেদের খাবার নিজেরাই উৎপাদন করব। এটা নিয়েও আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, আমরা রিজার্ভ নিয়ে বলতে বলতে সবার মাথায় এটা ঢুকে গেছে। আমাদের রিজার্ভ এখনো যা আছে তাতে অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমাদের এমন কোনো সংকট এভাবে নেই। তবে আমরা সবসময় রিজার্ভ ধরে রাখার চেষ্টা করি।
বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ভর্তুকি দেওয়াই আসন্ন বাজেটে সরকারকে বিপদে ফেলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভর্তুকিটাই আমাদের বাজেটে সবচেয়ে বেশি বিপদে ফেলছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এরকম দেয় না। জ্বালানি, বিদ্যুৎ সব খাতে ভর্তুকি দিচ্ছি। বিদ্যুতে ভর্তুকি দিয়ে লাভ কী? যে সবচেয়ে বেশি এয়ারকন্ডিশন চালায় তার লাভ সবচেয়ে বেশি। আমার গরিব মানুষের তো লাভ হয় না। আসলে ভর্তুকিতে লাভবান হচ্ছে বিত্তশালীরা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনার সময়, ইউক্রেন যুদ্ধের সময় বাজেট যে করতে পারছি এজন্য ধন্যবাদ জানাবেন। বাজেটের প্রস্তুতি ঠিকঠাক করে দিয়েছি। কোনো অনাথ এসে কী বলছে সেই দায়িত্ব তো আমরা নেব না। আইএমএফ লোন তাদেরকেই দেয় যাদের লোন পরিশোধ করার সক্ষমতা থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতি এতো অনাথ হয়নি। দেওয়ার মতো সামর্থ্য আছে বলেই আমরা নিয়েছি, এটা বাস্তব কথা। বর্তমানে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম যে হারে বেড়েছে সেটা সরকারের পক্ষে টানা সম্ভব নয় বলেও জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। আমি নিজে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি, বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি। তিনি বলেন, আমরা উপকূলীয় ১৩টি জেলায় ৭ হাজার ৪০টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছিলাম। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দ্রুত পুর্নবাসন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।