• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আজ দুপুর ১২টায় চুড়ান্ত আঘাত করতে পারে সেন্টমার্টিনে

প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৩, ০৪:৩৮ পিএম

আজ দুপুর ১২টায় চুড়ান্ত আঘাত করতে পারে সেন্টমার্টিনে

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বাংলাদেশ উপকূল স্পর্শ করেছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা। ইতোমধ্যে ঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও বরিশাল অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে আবহাওয়া দফতর বলছে রোববার (১৪ মে) দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে মোখার কক্সবাজার এলাকা অতিক্রম করবে। আর এই সময়টাই সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে।

সকালে আবহাওয়া দফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান সিটি নিউজ ঢাকাকে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর সময় হলো দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৩টা। এই সময়ের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগ অতিক্রম শুরু করবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল ১২ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এ সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটারে বেশি হতে পারে জানিয়ে এ আবহাওয়াবিদ আরও বলেন, ‌‘তখন প্রচণ্ড বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে, উপকূল প্লাবিত হবে।’

এদিকে সকালের বুলেটিনে আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়া ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল ৭ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
 

তবে ঘূর্ণিঝড় মোখা সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়নি আবহাওয়া দফতরের এ পূর্বাভাস সঠিক হয়েছে দাবি করে আবহাওয়াবিদ মো. আজিজুর রহমান আরও বলেন, ‘মোখার সুপার সাইক্লোন হয়ে ওঠার আর শঙ্কা নেই। আমরা বুলেটিনগুলো সঠিকভাবে দিতে পেরেছি, আর আমাদের পূর্বাভাসও সঠিক হয়েছে।’

এদিকে ভোর ৬টায় মোখা চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৮.৮° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।
 

আবহাওয়া দফতর কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। এছাড়া চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে।


এছাড়া উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার নদী বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে ঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

 

জেকেএস/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ