প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩, ০২:৪৩ এএম
পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে দেশের প্রাচীন পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম কনভেনশন। এবারের কনভেনশনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ইনোভেটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন’। শনিবার (১৩ মে) কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কনভেনশনে প্রকৌশলীদের পক্ষ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার রোডম্যাপ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া প্রকৌশলীদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি দাওয়া তুলে ধরে হবে।
শুক্রবার (১২ মে) রাজধানীর রমনায় এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলু লিখিত বক্তব্যে জানান, শনিবার সকাল ১১টায় আইইবির ৬০তম কনভেনশনের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোন কোন বিষয়গুলো তুলে ধরা হবে এমন প্রশ্নে প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলু জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে সারা বাংলাদেশের প্রকৌশলী সমাজের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রয়োজনীয় বিষয় তুলে ধরা হবে। এছাড়া কিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হবে।
দাবির মধ্যে রয়েছে-
১) ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে প্রধান প্রকৌশলী থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী পর্যন্ত মর্যাদা অনুযায়ী অন্তর্ভুক্ত করা।
২) প্রকৌশল সংস্থাসমূহের শীর্ষপদগুলোতে অপ্রকৌশলী ব্যক্তিদের স্থলে প্রকৌশলীদের পদায়ন নিশ্চিত করা।
৩) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রকৌশল উইং সৃষ্টি করা।
৪) কারিগরি জ্ঞানহীন বা প্রকৌশল কাজে চর্চাবিহীন ব্যক্তিদের পিডি হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে কারিগরি জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিদের পিডি হিসেবে নিয়োগ দান।
৫) ‘এলজিইডি’, ‘পানি সম্পদ প্রকৌশল’, ‘আইসিটি’ এবং ‘টেক্সটাইল’ ক্যাডার অনুমোদন করা। টেলিকমিউনিকেশন ক্যাডারে বন্ধকৃত নিয়োগ চালু করা।
৬) বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ‘সিনিয়র সার্ভিস পুল’ অর্থাৎ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব পদে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে থেকে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া।
৭) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বা সমমর্যাদার পদসমূহকে দ্বিতীয় গ্রেড এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বা সমমর্যাদার পদসমূহকে তৃতীয় গ্রেড প্রদান করা।
৮) বেসরকারি চাকরিতে অবস্থানরত প্রকৌশলীদের জন্য ‘চাকরির নীতিমালা’ প্রণয়নের দাবি জানানো হবে বলে জানান প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন শীবলু।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও ৫ দিনব্যাপী কনভেনশনের নানান আয়োজনের বিষয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সেমিনারের উদ্বোধনী ও সমাপনী পর্ব, শহীদ প্রকৌশলী পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, চারটি স্মৃতি বক্তৃতাসহ বিদেশি অতিথিদের সংবর্ধনা দেয়া এবং বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।
শহীদ প্রকৌশলী স্মৃতি বক্তৃতার মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মে) পাঁচ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুরু হয়। শুক্রবার (১২ মে) বিকেলে প্রকৌশলী এম.এ. জব্বার স্মৃতি বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। একই দিনে শহীদ প্রকৌশলী পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মন্ত্রী লে. কর্নেল মো. ফারুক খান।
শনিবার (১৩ মে) বিকেলে ড. প্রকৌশলী এম.এ. রশীদ স্মৃতি বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ. ম. রেজাউল করিম। একই দিন ড. প্রকৌশলী জামিলুর রেজা চৌধুরী স্মৃতি বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
রোববার (১৪ মে) ‘ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলেশন প্রিপারেডনেস ইন দ্যা সোসাইটি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনার উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। আর সোমবার (১৫ মে) দুপুরে জাতীয় সেমিনারের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান।
ওইদিন কনভেনশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশান এরশাদ।
আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আইইবির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, প্রকৌশলী খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, সহকারী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবুল কালাম হাজারী, প্রকৌশলী মো. রনক আহসান, প্রকৌশলী প্রতীক কুমার ঘোষ, প্রকৌশলী শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন, প্রকৌশলী অমিত কুমার চক্রবর্তী, প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, প্রকৌশলী মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া, প্রকৌশলী মেছবাহুজামান চন্দন, আইইবির ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোল্লা মোহাম্মদ আবুল হোসেন, সম্পাদক প্রকৌশলী খায়রুল বাসার, ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী মো. হাবিব আহমেদ হালিম মুরাদসহ আইইবির বিভিন্ন সেন্টার, সাব-সেন্টারের প্রতিনিধিরা।
প্রসঙ্গত, আইইবির সবশেষ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। করোনা মহামারির কারণে গত ৩ বছর কোনো কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়নি।
জেকেএস/