• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বাদ পড়লেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৩, ০৭:৫১ পিএম

একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বাদ পড়লেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থেকেও সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এর আগে একই অভিযোগে অধ্যাপক ইমতিয়াজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।


বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ ও সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল, শিক্ষাসচিব সোলেমান খান প্রমুখ এতে উপস্থিত ছিলেন। গত ৬ এপ্রিল আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) গেছেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাপক ইমতিয়াজ রচিত ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগের বিষয় উদ্ঘাটনের জন্য গঠিত কমিটির সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, তাঁর গ্রন্থে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ, বঙ্গবন্ধু এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিবেশিত কতিপয় তথ্য অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও ইতিহাসের বিকৃতি। সভায় উল্লিখিত গ্রন্থে অসত্য তথ্য পরিবেশন ও ইতিহাস বিকৃতির তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। গ্রন্থটির লেখক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং প্রকাশক ইউপিএলকে গ্রন্থটি অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য সভা থেকে আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননাকারী এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গত ২৯ মার্চ একটি অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত কলামে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী অভিযোগ করেন, ২০০৯ সালে প্রকাশিত ইমতিয়াজের ‘হিস্টোরাইজিং ১৯৭১ জেনোসাইড: স্টেট ভার্সেস পারসন’ শীর্ষক বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে।

এরপর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। 


মুচলেকায় ক্ষমা পেলেন বিএনপিপন্থী শিক্ষক 
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতা এএসএম আমানুল্লাহর ফেসবুক পেজে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটি ‘মনগড়া ও ভিত্তিহীন’ পোস্টের বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন জিয়া রহমানের একটি প্রতিবেদন গতকালের সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। পরে সভায় মুচলেকার শর্তে আমানুল্লাহর ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিন্ডিকেট সভা মনে করে, এ এস এম আমানুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট পাঠ্যপুস্তক, সরকারের শিক্ষানীতি ও ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার একটি অপপ্রয়াস। তিনি ইতিমধ্যে তাঁর কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও আচরণ করবেন না- এই মর্মে লিখিত মুচলেকা দেয়ার শর্তে তাঁর ক্ষমাপ্রার্থনার আবেদন সভায় মঞ্জুর করা হয়েছে।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ