• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: এপ্রিল ৩০, ২০২৩, ০৫:২১ পিএম

আমরা কিছুটা স্বস্তির জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আইএমএফ বলেছে, তারা ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের দিকে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি ‘ব্রিদিং স্পেস’ হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ।

আর আইএমএফ বলেছে, তারা ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের দিকে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আছে।

আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শনিবার বিকালে ওয়াশিংটনের হোটেল রিজ কার্লটনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেখানেই তাদের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছে বাসস।

বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলেন, “আমরা যে লোনটা নিয়েছি আইএমএফের, একটা ‘ব্রিদিং স্পেস’ হিসেবে।”

আইএমএফ গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে, যার প্রথম কিস্তি বাংলাদেশ ইতোমধ্যে হাতে পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

“পৃথিবীতে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল (সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে)। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই অগ্রগতিই করোনাভাইরাস মহামারীর পরও বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রেখেছে।”

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের বাধা অতিক্রম করে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মত নেতৃত্বই প্রয়োজন।

মোমেন জানান, ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ অর্জন করেছে বলে প্রশংসা করেন ক্রিস্টিলিনা জর্জিয়েভা।

মহামারীর মধ্যেও সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে পারায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা আইএমএফ প্রধানের সামনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, দেশের এই উন্নয়ন রাতারাতি হয়নি, এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফসল।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে কীভাবে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চান, সেই পরিকল্পনা তিনি তৈরি করেন জরুরি অবস্থার সময়, যখন তিনি জেলে ছিলেন। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সেসব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা এবং নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও আইএমএফ প্রধানের সামনে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের এই উন্নয়নযাত্রায় আইএমএফ এর ভূমিকার প্রশংসা করে ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ব্রিফিংয়ে বলেন, গত ১৪ বছরে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সব সময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে আইএমএফ; প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে। আর বাংলাদেশ কখনো তা থেকে বিচ্যুত হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত। বহু দেশ যেখানে বছরের পর পর আলোচনা করেও ঋণ পায়নি, বাংলাদেশ মাত্র ২ সপ্তাহের আলোচনায় তা পেয়েছে।

আইএমএফ প্রধানকে উদ্বৃত করে গভর্নর বলেন, ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যহত রাখবে আইএমএফ ।

অন্যদের মধ্যে অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

 

জেকেএস/

আর্কাইভ