প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৩, ০৬:০৮ পিএম
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে রাশিয়ার দেয়া ঋণ পরিশোধের জটিলতা অবশেষে কাটছে। এক বছরের বেশি সময় ধরে নানা জল্পনা-কল্পনা শেষে ঋণের অর্থ মার্কিন ডলারের পরিবর্তে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে পরিশোধে একমত হয়েছে ঢাকা-মস্কো। আর ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় যত দ্রুত সম্ভব এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথে হাঁটার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের।
দেশে চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বরে উদ্বোধনের পর প্রত্যাশিত গতিতে এগিয়ে চলছে এর নির্মাণকাজ। ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই প্রকল্পের ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকার মধ্যে রাশিয়ান ঋণ ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের চুক্তি অনুসারে ঋণের প্রথম ধাপের সুদের কিস্তি পরিশোধ হচ্ছিল মার্কিন ডলারে।
তবে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা দেশগুলো গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আর্থিক লেনদেনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফট থেকে রাশিয়াকে বের করে দিলে বেকায়দায় পড়ে ঢাকা। এতে ৩১৮ মিলিয়ন ডলারের একটি কিস্তি দেয়া সম্ভব হয়নি। উপায় খুঁজতে সামনে আসে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত চীনা নেটওয়ার্ক ক্রস বর্ডার ইন্টারব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেম (সিআইপিএস)। যেখানে লেনদেন হয় ইউয়ানে।
সুইফট নিষেধাজ্ঞার অচলাবস্থা কাটাতে অবশেষে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে সিআইপিএস ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ঢাকা-মস্কো। এ সিদ্ধান্তকে যুগোপযোগী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, বাস্তবসম্মত পথেই এগিয়েছে সরকার। ঋণের অর্থ পরিশোধে রুবেল ব্যবহার হচ্ছে না, আবার ডলারও ব্যবহার করা হচ্ছে না।
আর তাইওয়ান ইস্যুতে বৈশ্বিক ভূরাজনীতি আরও ঘোলাটে হওয়ার আগেই এই পদ্ধতিতে অর্থ লেনদেন শুরুর তাগিদ দেন জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, তাইওয়ানে ইউক্রেনের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা দেখা দেবে। এতে ইউয়ান দিয়ে অর্থ লেনদেন কঠিন হয়ে পড়বে। এ জন্য প্রকল্পটি যত দ্রুত শেষ করা যায় ততই ভালো।
জেকেএস/