প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০৫:৩৬ এএম
ঈদের বাড়তি ব্যয় মেটাতে ব্যাংকগুলোয় নগদ অর্থের চাহিদা বেড়েছে। গ্রাহকরা বেশি করে টাকা তুলে নিচ্ছেন। এতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে ধার করছে। ফলে কলমানিতে (স্বল্প সময়ের জন্য ধার) সুদের হারও বেড়েছে। সোমবার এ হার বেড়ে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে উঠেছে। আগে এ হার ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
ব্যাংকাররা জানান, এবার ঈদের চাহিদাকে কেন্দ্র করে কলমানির সুদের হার আরও বাড়ত। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোরভাবে তদারকি করায় বেশি বাড়েনি। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তারল্য সহায়তার আওতায় নগদ অর্থের জোগান দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, সোমবার কলমানিতে একদিনের জন্য ব্যাংকগুলো ধার করেছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। সুদের হার ছিল ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ। এক সপ্তাহের জন্য ধার করেছে ১১০ কোটি টাকা। সুদের হার ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ, আট দিনের জন্য ধার করেছে ৪০৫ কোটি টাকা।
সুদের হার ছিল ৭ থেকে পৌনে ৮ শতাংশ। নয় দিনের জন্য ধার করেছে ২০০ কোটি টাকা। সুদের হার ছিল সাড়ে ৭ থেকে পৌনে ৯ শতাংশ। ১০ দিনের জন্য ধার করেছে ৬০০ কোটি টাকা।
সুদের হার ছিল পৌনে ছয় থেকে সাড়ে ৮ শতাংশ। ১৩ দিনের জন্য সাড়ে ৬ থেকে ৯ শতাংশ সুদে ধার করেছে ৬১৬ কোটি টাকা। এছাড়া মেয়াদি ধারের মধ্যে ৯০ দিনের জন্য সুদের হার ছিল ৯ শতাংশ। ধারের পরিমাণ ১৮০ কোটি টাকা।
ব্যাংকগুলোর প্রায় সব শাখায়ই গ্রাহকের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। নগদ টাকা তোলার পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র বা মেয়াদি আমানত থেকেও গ্রাহকরা টাকা তুলেছেন। ঈদের বাড়তি খরচ মেটাতে গ্রাহকদের হাত পড়েছে এবার সঞ্চয়ে। কারণ, পণ্যমূল্য বাড়ায় ঈদের খরচও বেড়ে গেছে। যে কারণে ব্যাংক থেকে নগদ টাকার তোলার প্রবণতাও বেড়েছে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয়ও একই অবস্থা দেখা গেছে। গ্রাহকরা তাদের মেয়াদি সঞ্চয় তুলে ঈদের বাড়তি খরচ মেটাচ্ছেন।
ব্যাংকাররা জানান, এবার ঈদে ভিন্নচিত্র দেখা গেছে। অন্যান্য ঈদের সময় টাকা তোলা হতো বেশি, জমা হতো কম। এবার ঈদে টাকা তোলা হচ্ছে বেশি আবার জমাও হচ্ছে বেশি।
এর মানে হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা ভোক্তার কাছে পণ্য বিক্রির পর সে টাকা দিয়ে আবার নতুন পণ্য কিনে দোকানে তুলছেন না। ব্যাংকেই তা জমা করে রাখছেন। এতে বোঝা যাচ্ছে, ভোক্তার পণ্য কেনার চাহিদা কম। যে কারণে তারা দোকানে নতুন করে পণ্য তুলছেন না।
এদিকে ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। চলতি মাসের ১৪ দিনে প্রবাসীরা প্রায় ৯৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। রেমিট্যান্সের বিপরীতে নগদ টাকার জোগান দিতে অনেক ব্যাংকের শাখা হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে এ ঘটনা বেশি ঘটছে।
ব্যাংকগুলোয় এমনিতেই তারল্য সংকট রয়েছে। এর মধ্যে ডলার জমা হলে টাকা দিতে হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আগে জানালে চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে নগদ টাকার জোগান দেওয়া হচ্ছে।