• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

যথাসময়ে মিলবে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৩, ০৫:৩৩ এএম

যথাসময়ে মিলবে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ যথাসময়ে পাওয়া যাবে বলে সংস্থাটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ওই ঋণ পেতে এখন শর্তগুলো বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সব শর্তই নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে।
 
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল সাইড লাইনে আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধি দল ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি যথাসময়ে ছাড়ের বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছে।
 
গত সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে সংস্থা দুটির বসন্তকালীন বৈঠক শুরু হয়েছে। চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছে। তারা ইতোমধ্যে সাইড লাইনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক থেকে আগামী জুনের মধ্যে ৫০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া যাবে বলে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। 

 

গত ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। দ্বিতীয় কিস্তি বাবদ এর চেয়ে কিছু বেশি অর্থ পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে শর্তের বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করতে আইএমএফের একটি টিম বাংলাদেশে আসবে। তারা ফিরে গিয়ে প্রতিবেদন দিলেই ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় হবে। বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ঋণ ডলার দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
 
বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) বসন্তকালীন সভায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার জন্য তিনটি প্রধান কারণকে শনাক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- জলবায়ুর পরিবর্তনের অস্তিত্বগত হুমকি, করোনা মহামারির প্রভাব ও ইউক্রেনে রাশিয়ান আক্রমণ। এসব প্রভাবে পণ্যের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, পণ্যমূল্য বেড়েছে। এতে লাগামহীণভাবে বেড়েছে মূল্যস্ফীতির হার; যা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। এর সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে। এসব দেশকে রক্ষা করতে সহায়তা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সংস্থা দুটি। কিন্তু উন্নত দেশগুলো সহায়তার পরিবর্তে বাণিজ্যিক ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
 
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বৈঠকে বলা হয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তা আরও কিছু সময় চলতে পারে। জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিকভাবে খাদ্য উৎপাদন কম হচ্ছে। বাড়ছে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। ইতোমধ্যে দারিদ্র নিরসনে যে অগ্রগতি হয়েছিল তা এখন আবার বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছে। 

বৈঠকে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলা করতে চলতি বছর থেকে আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। উন্নত দেশগুলোকে এসব অর্থ জোগান দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

বৈঠকে বলা হয়, অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা থেকে স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে রক্ষা করতে সংস্থা দুটি ৫১ হাজার কোটি ডলার অতিরিক্ত ঋণ দেবে। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৫ হাজার কোটি ডলার, আইএমএফ দরিদ্র দেশগুলোকে সুদবিহীণ ঋণ দেবে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, স্বল্প ও মধ্য আয়ের দেশগুলোকে ঋণ দেওয়া হবে ৪৪ হাজার কোটি ডলার। বাংলাদেশ দুটি সংস্থারই সদস্য হিসেবে ওই ঋণের একটি অংশ পাবে। এ ছাড়া তারা জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবিলা করতে ঋণের জোগানও বাড়াবে। এ খাতেও বাংলাদেশ বাড়তি ঋণ পাবে। 

আর্কাইভ