• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বঙ্গবাজারের দোকানিরা শেষ সম্বল নিয়ে ফুটপাতে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩, ০২:০৩ এএম

বঙ্গবাজারের দোকানিরা শেষ সম্বল নিয়ে ফুটপাতে

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রতিবছর এই মৌসুমে জমজমাট থাকত বঙ্গবাজার। রাজধানীতে তৈরি পোশাকের অন্যতম পাইকারি ও খুচরা বাজার এটি। পুরো কমপ্লেক্স এখন ধ্বংসস্তূপ। গত মঙ্গলবার ভোরে লাগা আগুনে কমপ্লেক্সের চারটি মার্কেটের প্রায় পাঁচ হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখনো এখানে-ওখানে স্তূপ থেকে বেরোচ্ছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। কাঠ, টিন ও লোহার অবকাঠামোতে তৈরি এসব দোকানের লোহা কাঠামো ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।

ঘটনার দিন অনেকেই জীবন বাজি রেখে কিছু মালামাল বের করতে পেরেছিলেন। উদ্ধার করা সেসব মালামালই দোকানি ও ব্যবসায়ীর এখন জীবিকার শেষ সম্বল। দোকান, মালামাল, নগদ টাকা সব হারিয়ে নিঃস্ব এই ব্যবসায়ীরা শেষ সম্বলটুকু নিয়ে বসেছেন ধ্বংসস্তূপের পাশে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচের ফুটপাতে।

অক্ষত অথবা সামান্য ছাই-কালি লাগা শার্ট, প্যান্ট, ট্রাউজার, টি-শার্ট সাজিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছেন তাঁরা। এমন দোকানের সংখ্যা ৫০টির মতো। আজ শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবাজারসংলগ্ন এই সড়ক ধরে হেঁটে যেতে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। কানে আসছে দোকানিদের হাঁকডাক। ক্রেতাও নেহাত কম নয়।

মহানগরী মার্কেটে অর্ণব গার্মেন্টস নামে দুটি দোকান ছিল মো. মুরাদ হোসেনের। পাঞ্জাবি, ট্রাউজার আর শিশুদের কাপড়ের রমরমা ব্যবসা ছিল তাঁর। দুই দোকানে ঈদ উপলক্ষে ছয় লাখ টাকার নতুন মাল তুলেছিলেন, সব মিলিয়ে ছিল প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল। সাজিয়ে রাখা সামান্য কিছু মালামাল ছাড়া আর কিছুই বের করতে পারেননি এই ব্যবসায়ী। ক্যাশ বাক্সে থাকা নগদ দুই লাখ টাকাও পুড়েছে। দুই দোকানে ছয়-সাতজন কর্মচারী। নিরুপায় এই ব্যবসায়ী নিজেই লেগে পড়েছেন ফুটপাতে বেচা-বিক্রিতে। কথা কথায় আক্ষেপ করে বললেন, ‘১৬ বছর প্রবাসে থাইকা যা কামাইছিলাম তার সব দিয়া এই ব্যবসা শুরু করছিলাম ৷ এখন আমার কিছুই নাই। নিঃস্ব হইয়া রাস্তায় খাড়াইছি, কাপড় বেচতেছি।’

কথার ফাঁকেই এক নারী ক্রেতা এলেন। ছেলে ও স্বামীর জন্য পায়জামা কিনবেন, সাইজ অনুযায়ী দেখাতে বললেন। চাহিদা অনুযায়ী কাপড় পছন্দও করলেন ৷ এবার দামাদামি করতে গেলে বিক্রেতা মুরাদ হোসেন বললেন, ‘আপা আমরা এহানে হাতিঘোড়া লাভ কর‍মু না। কেনা দামের থাইকা ১০ টাকা বেশি দেবেন। ফুটপাতে দাঁড়ায়া এইডাই আমার আবদার। ব্যবসা করোনের মন-মানসিকতা নাই।’ 

আর্কাইভ