প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৩, ১২:১৪ এএম
বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পরিশোধে সরকারের কাছে বিনা সুদে ঋণ সহায়তা চেয়েছেন। পাশাপাশি একই স্থানে আবার ব্যবসা পরিচালনার ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। বুধবার (৫ এপ্রিল) সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এ আহ্বান জানান।
ব্যবসায়ী দিদার মিয়া বলেন, আমার বাড়ির জমি দেখিয়ে ঈদের আগে ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। অন্যান্য মালের সঙ্গে আগুনে আমার তিনটি দোকানের মালামাল পুড়েছে, আমি এখন নিঃস্ব, পথের ফকির। ব্যাংকের কিস্তি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। সরকারে কাছে আবেদন, ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য আমাদের বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হোক। আর এখানে পুনরায় দোকান বসানোর অনুমতি দেওয়া হোক। যাতে যেসব ব্যবসায়ীর গুদামে কাপড় আছে তারা অন্তত সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।
১৯৯৭ সাল থেকে বঙ্গবাজারে ব্যবসা করে আসা জুয়েল হোসেন বলেন, জীবনের সবকিছু দোকানে বিনিয়োগ করেছি। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন চলব কীভাবে জানি না। জমি বন্ধক রেখে ২৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকা দিতে না পারলে জেলে যেতে হবে। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ, বিনা সুদে ঋণ দিন।
ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, বঙ্গবাজার ও ইসলামপুর মার্কেট মিলে আমার চারটি দোকান আছে। এখানে দুটি দোকান ছিল। ঈদ সামনে রেখে ৪৫ লাখ টাকার মালামাল কিনেছি। ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ১১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। এখন ঋণের এক টাকা দেওয়ার মতোও অবস্থা নেই। সরকারের সহায়তা ছাড়া এ থেকে উদ্ধার পাব না।
রাফা গার্মেন্টসের মালিক ফারুক দিদার বলেন, আমার দোকানে ১০ লাখ টাকার বেশি মালামাল ছিল। ক্যাশ ছিল নগদ ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। সব পুড়ে ছাই হয়েছে। ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে, বিকল্প কোনো পথ নেই।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, বঙ্গবাজারের আগুনে ব্যবসায়ীদের দেড় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকারের কাছে আমরা সহায়তা চেয়েছি। সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। আশা করছি, ক্ষতিপূরণ পাব।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লাগে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের আরও কয়েকটি মার্কেটে। সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রায় ৫ হাজার ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।