প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০৯:০৩ পিএম
হরকাতুল জিহাদেরই একটি অংশ হিসেবে যাত্রা নতুন এই সংগঠনের। নতুন সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও দাওয়াতে কাজে নিযুক্ত ছিল মহিবুল্লাহ। তথাকথিত হিজরতকারী ৬০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য তার কাছে বরিশালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে পাঠানো হতো তথাকথিত হিজরতে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র নায়েবে আমির শায়েখ মহিবুল্লাহকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসি। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে সিটিটিসির ইনভেস্টিগেশন টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে ২টি মোবাইল এবং ১টি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
সিটিটিসি প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সিটিটিসির হাতে গ্রেফতার সংগঠনটির শুরা সদস্য ডা. শাকের ওরফে শিশির, পলাতক জঙ্গি নেতা শামিন মাহফুজসহ গ্রেফতার শায়েখ মহিবুল্লাহ বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে অবস্থিত জামাতুল আনসার ফিল হিন্দিস শারক্বীয়ার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে যায়।
এ সময় প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে কুকি-চীনদের বিদ্রোহী সংগঠন কেএনএফ (কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর তত্ত্বাবধানে সশস্ত্র প্রশিক্ষণ চলতো। সেখানে তাদের সঙ্গে কেএনএফ এর প্রধান নাথান বম ও অন্যান্য কুকি-চীন নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামে সংগঠনটির নামকরণ করা হয় এবং শুরা কমিটি গঠন করে। গ্রেফতার মহিবুল্লাহকে সংগঠনটির নায়েবে আমির হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।
সিটিটিসি প্রধানের দাবি, গ্রেফতার মহিবুল্লাহ ক্যাম্পে অবস্থানের সময় সন্ধ্যার পর প্রশিক্ষণরত সদস্যদের বয়ান দিতেন। তার বয়ানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে জঙ্গি সদস্যদের জিহাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
আসাদুজ্জামান বলেন, শায়েখ মহিবুল্লাহ পাহাড়ে কিছুদিন অবস্থান করার পর ঢাকায় চলে আসেন এবং শুরা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এনক্রিপ্টেড চ্যাটের মাধ্যমে সমন্বয় করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দাওয়াতের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রম বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
শুরা সদস্য ডা. শাকেরকে দাওয়াতি কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য শায়েখ মহিববুল্লাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সংগঠনের শুরা পর্যায়ের একাধিক সদস্যের সঙ্গে ঢাকা, সিলেট ও কিশোরগঞ্জে সংগঠনের কার্যক্রম জোরদার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি একাধিক বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া তিনি হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় বিভিন্ন সময়ে আসা-যাওয়া করতেন এবং সেখান থেকে পেইনড্রাইভের মাধ্যমে বিভিন্ন জিহাদি ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে তার ল্যাপটপে সংরক্ষণ করতেন।
জিহাদ সংক্রান্ত বিষয়ে তার নিজস্ব লেখার খসড়া কপিও তার কাছে পাওয়া গেছে। ডা. শাকের সিটিটিসির হাতে গ্রেফতারের পরে শায়েখ মহিবুল্লাহ নিজেকে আড়াল করতে তার ব্যবহৃত সিম ও মোবাইল ফোন নষ্ট করে ফেলেন।
আরিয়ানএস/ এএল