ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীতে মিরপুরবাসীর দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে কালশী ফ্লাইওভার। ফলে এ পথে দীর্ঘদিনের যানজট থেকে মুক্তির নতুন পথ দেখছেন নগরবাসী। এ উড়ালসড়কের মাধ্যমে মিরপুর থেকে উত্তরা, বিমানবন্দর, বনানী মহাখালী থেকে যাতায়াতের পথ সুগম হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে কালসী বালুর মাঠের জনসভায় বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি এ ফ্লাইওভারটি। এই ফ্লাইওভার মিরপুরের নতুন গেটওয়ে তৈরি করবে। শুধু এই ফ্লাইওভারই নয়, এর সঙ্গে নিচের প্রায় চার কিলোমিটার সড়ক, নতুন ফুটওভারব্রিজ আর ফুটপাথ সব মিলিয়ে এই অঞ্চলের যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, ফ্লাইওভারটি মিরপুরবাসীর জন্য একটি বড় পুরস্কার হবে। সেখানে কোনো যানজট হবে না। ফ্লাইওভারের নিচে ফুটপাত ও সাইকেল লেন করা হয়েছে। দুটি ফুটওভার ব্রিজ ও করা হয়েছে।
নগরীর ব্যস্ততম এই পথে যানজট একটি নিয়মিত চিত্র। বৃহত্তর মিরপুরে ঢুকতে কিংবা বের হতে এই কালশী মোড়ে গাড়ির চাপে প্রতিনিয়তই ভুগতে হয় এই পথে চলাচলকারীদের।
যাত্রী ও বাসচালকরা জানান, আগে এ রাস্তায় অনেক জ্যাম (যানজট) হতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হতো। এ ফ্লাইওভারটি হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি এখন অনেক কমে যাবে বলে তাদের আশা। ফ্লাইওভারটি ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্যপরিবহনে অনেক সহায়ক হবে বলেও জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এলাকাভিত্তিক সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানের এমন উদ্যোগ দীর্ঘমেয়াদে পুরো নগরীর যানজট সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ইসিবি চত্বর থেকে সরাসরি এ উড়ালপথ ধরে চলে যাওয়া যাবে পল্লবী কিংবা মিরপুরে। মূল ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য দুই হাজার ৩৩৫ মিটার। ৪৭৫ মিটারের র্যাম্প রয়েছে পাঁচটি। ৬৮টি স্প্যানের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এ উড়ালসড়কের গার্ডার সংখ্যা ১৭টি।
নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ফ্লাইওভারের নিচে ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে, যা ইসিবি চত্বর থেকে শুরু হয়ে কালশী মোড় হয়ে মিরপুর ডিওএইচএসে শেষ হয়েছে। বাস, রিকশা, সাইকেলের জন্য করা হয়েছে আলাদা আলাদা লেন।
প্রকল্প সূত্র জানায়, সরকারি অর্থায়নে ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই কিলোমিটার ফ্লাইওভার (১ দশমিক ৭ কিলোমিটার) নির্মাণের পাশাপাশি সড়ক, ফুটপাত এবং ড্রেনের উন্নয়ন কাজও করা হয়েছে। ৩ দশমিক ৭ কিলোমিটার সড়ক, ফুটপাত প্রশস্তকরণ, সড়ক বিভাজক তৈরি এবং ড্রেন নির্মাণ ও কমিউনিকেশন ডাক্টও তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটির স্বত্বাধিকারী সংস্থা ডিএনসিসি। উদ্বোধনের পর থেকে প্রকল্পের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে ডিএনসিসি।
আরিয়ানএস/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন