প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২১, ০৫:০৯ পিএম
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর
রাজ্জাক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে
বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও নানামুখী
প্রণোদনার ফলে বিগত ১২
বছরে দেশে তেলজাতীয় ফসলের
উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সমন্বিত কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী
বুধবার (২৩ জুন) সকালে
সচিবালয়ের অফিস কক্ষ থেকে
ভার্চুয়ালি ‘তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পের জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
মন্ত্রী
বলেন, ‘ভোজ্যতেলের বেশির ভাগ বিদেশ থেকে
আমদানি করতে হয় এবং
এর পেছনে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। দেশে
তেল উৎপাদনের মূল বাধা হলো
জমির স্বল্পতা। ইতোমধ্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল ও স্বল্পকালীন উন্নত
জাতের ধান ও সরিষার
জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর চাষ দ্রুত কৃষকের
নিকট ছড়িয়ে দেয়া ও জনপ্রিয়
করতে পারলে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি
না কমিয়েও অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষাসহ
তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।’
মন্ত্রণালয়ের
সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল
ইসলাম বলেন, ‘ব্রিধান-৭১, ব্রিধান ৮১,
ব্রিধান ৮৯, ব্রিধান ৯২সহ
উন্নতজাতের ধান চাষ করে
হেক্টরপ্রতি এক টন উৎপাদন
বাড়ানো সম্ভব। এটি করতে পারলে
১০ শতাংশ জমি উদ্বৃত্ত থাকবে,
যাতে ধান চাষ না
করে অন্যান্য ফসল চাষ করা
যাবে। এ ছাড়া, উন্নত
জাতের ধান ও সরিষার
চাষ করে শস্যের নিবিড়তা
বাড়ানো সম্ভব।’
সভায়
জানানো হয়েছে, দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদার ৯০ শতাংশ আসে
বিদেশ থেকে আর দেশে
উৎপাদন হয় মাত্র ১০
শতাংশ। ২০১৮-১৯ সালে
বিদেশ থেকে প্রায় ৪৭
লাখ মেট্রিক টন তেল ফসল
আমদানি করতে হয়েছে, যার
পেছনে ব্যয় হয়েছে ২৪
হাজার ৮০০ কোটি টাকা।
ধানসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় কৃষকেরা এ ফসল চাষে
কম আগ্রহী। বর্তমানে দেশে ফসল আবাদের
৭৫ শতাংশ জমিতে দানাজাতীয় ফসলের চাষ হয়। অন্যদিকে
ক্রমেই তেলের ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৫ সালে তেল
এবং চর্বি ব্যবহারের পরিমাণ ছিল ২.২২
মিলিয়ন টন, তা বেড়ে
২০১৯ সালে হয়েছে ৩.০৮ মিলিয়ন টন।
মাথাপিছু তেল ও চর্বি
ব্যবহারের পরিমাণ বছরে ২০১৫ সালে
ছিল ১৩.৮০ কেজি,
তা বেড়ে ২০১৯ সালে
হয়েছে ১৮.৭ কেজি।
কর্মশালায়
বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র
সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহর সভাপতিত্বে
অন্যান্যের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত
সচিব (পরিকল্পনা) ড. মো. আব্দুর
রৌফ, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) হাসানুজ্জামান কল্লোল বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রকল্প
পরিচালক মো: জসীম উদ্দিন।
উল্লেখ্য,
২৭৮ কোটি টাকার ‘তেলজাতীয়
ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি’ প্রকল্পটি ২০২০-২০২৫ মেয়াদে
২৫০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে। এর মাধ্যমে
সরিষা, তিল, সূর্যমুখী, চীনাবাদাম,
সয়াবিনসহ তেল ফসলের আবাদ
এলাকা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি
করা হবে। এ ছাড়া,
বিএআরআই ও বিনা কর্তৃক
উদ্ভাবিত তেল ফসলের আধুনিক
প্রযুক্তির সম্প্রসারণ এবং মৌচাষ অন্তর্ভুক্ত
করে তেলজাতীয় ফসলের হেক্টরপ্রতি ফলনও ১৫- ২০
শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ফলে তেলজাতীয় ফসলের
উৎপাদন বাড়বে ও আমদানির পরিমাণ
হ্রাস পাবে।
তরিকুল/এম. জামান