প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ১১:২২ পিএম
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, দেশে এক শ্রেণির অপশক্তি পাঠ্যবইয়ের বিষয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এসব মিথ্যাচার প্রশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাঁদের যদি ভুল থাকে, তবে সেটি স্বীকার করে তাঁরা সংশোধন করবেন।
যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৫১তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে যেখানে ভুল দেখা গেছে, তখনই দায়িত্বশীলদের দিয়ে সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রমের বইয়ে কোথাও কোথাও ভুল থাকতে পারে, এগুলো সংশোধনের জন্য দুটি কমিটি করে দিয়েছি। যখনই ভুলগুলো চিহ্নিত হবে, সঙ্গে সঙ্গে সংশোধন করা হবে। তবে যেখানে ভুল নেই, সেখানে ভুল নিয়ে মিথ্যাচার করছে একটি অপশক্তি। তারা দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে চায়। যে অপশক্তিরা মিথ্যাচার করছে, তাদের ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিহত করব।’
আজ বৃহস্পতিবার যশোরে ৫১তম শীতকালীন জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন দীপু মনি। যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছয় দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশ গড়ার জন্য যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি চ্যালেঞ্জও আছে। সম্ভাবনাকে সম্ভব করতে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের তৈরি করতে হবে। সেই তৈরি হওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।’ নতুন পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের দক্ষতা বৃদ্ধি, চিন্তা করার দক্ষতা, সমসাময়িক বিষয়ে সমাধানের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ সচিব কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওমর ফারুক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার প্রমুখ। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহসান হাবিব।
অধ্যাপক আহসান হাবীব জানান, পদ্ম, গোলাপ, বকুল ও চাঁপা—এই চার অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীদের নিয়ে হচ্ছে এই প্রতিযোগিতা। ময়মনসিংহ ও ঢাকা অঞ্চল নিয়ে গঠিত পদ্ম। রাজশাহী ও দিনাজপুর অঞ্চল নিয়ে গঠিত চাঁপা। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে বকুল। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চল নিয়ে গঠিত গোলাপ।
শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে অ্যাথলেটিকসের পাশাপাশি হকি ও সাইক্লিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। নাদিরা ইসলাম স্মৃতি ইনডোর ভলিবল গ্রাউন্ডে ভলিবল, বাস্কেটবল, জিমনেসিয়ামে ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিস অনুষ্ঠিত হবে। শামস্-উল হুদা ফুটবল একাডেমি মাঠে ছাত্রীদের ক্রিকেট ও উপশহর কেন্দ্রীয় ক্রীড়া উদ্যানে ছাত্রদের ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হবে। এই প্রতিযোগিতার ৫১তম আসর চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। ছয় দিনব্যাপী শুরু হওয়া ৮ ইভেন্টে ৮২৪ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নিচ্ছে। অ্যাথলেটিকসে সবচেয়ে বেশি ৩৪৪ জন অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির আয়োজনে ও যশোর শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় চার দিন মাঠের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে যশোরের ছয়টি মাঠ।
জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এক লাখ, দ্বিতীয় হওয়া প্রতিষ্ঠানকে ৭০ হাজার ও তৃতীয় প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে। এ ছাড়া বিজয়ী প্রতিযোগীদের ট্রফি, মেডেল, প্রাইজবন্ড ও সনদ দেওয়া হবে। এই প্রতিযোগিতা ঘিরে যশোর শহরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
আরিয়ানএস/