• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নতুন বছরে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১৯৫ কোটি ডলার

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩, ১২:২১ এএম

নতুন বছরে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১৯৫ কোটি ডলার

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। সংকট কাটাতে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবুও সহসাই কাটছে না সংকট। তবে ডলার সংকটের মধ্যেই সুবাতাস বইছে প্রবাসী আয়ে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে।

বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) এ অর্থ ২০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলারের বেশি। এর আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ডলার সংকটের মধ্যে মে মাসে রেমিট্যান্স কমল ১৩%

এদিকে, ডলার সংকট দূর করতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত জরুরি আমদানি দায় মেটাতেই এ ডলার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এর পরও আটকে আছে কোটি কোটি টাকার পণ্য। ডলার সংকটে আমদানিকারকদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে দেশের অনেক ব্যাংক। এসব সমস্যা সমাধানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রিজার্ভ থেকে ৮৫০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এত পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি।

রেমিট্যান্সের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য রেমিট্যান্সে প্রণোদনাও বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া নানা উদ্যোগ কাজে আসছে। এখন বৈধপথে রেমিট্যান্স বাড়তে শুরু করেছে।


তিনি বলেন, আমাদের সামনে দুইটি ধর্মীয় উৎসব (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) রয়েছে। এ দুই উৎসবকে কেন্দ্র করে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে। কারণ প্রবাসীরা নিজ পরিবারের কেনাকাটায় এ সময়ে বেশি অর্থ পাঠিয়ে থাকেন। এতে দেশের ডলার সংকটও কিছুটা কেটে যাবে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ইতিবাচক ধারায় ফিরবে।

প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের ডলার ১০৮ টাকায় কিনবে ব্যাংক বিডিমর্নিং | নিউজ |  bdmorning | news

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছেন, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত মাসের চেয়ে জানুয়ারিতে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি এসেছে ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।


আলোচিত মাস জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩৫৪ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর পরেই এসেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ১২১ দশমিক শূন্য ৩ মিলিয়ন ডলার। এছাড়াও আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১৭ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার এবং সরকারি অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০৪ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

তবে জানুয়ারি মাসে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ডিবিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে। এছাড়াও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমেও কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

রেমিটেন্স : প্রতি ডলার ১০৭ টাকা নির্ধারণ করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স আসে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই ছিল রেমিট্যান্সের প্রবাহ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এরপর আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

এর পরই কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ, যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। অক্টোবরে আসে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। এছাড়া সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স এলো ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

 

সাজেদ/

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ