• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

অর্থ-সম্পদের জন্যই সাংবাদিক আফতাবকে হত্যা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩, ১১:৫২ পিএম

অর্থ-সম্পদের জন্যই সাংবাদিক আফতাবকে হত্যা

ছবিঃ সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নগদ টাকা ও বাড়ি দখলের জন্যই প্রবীণ চিত্রসাংবাদিক আফতাব আহমেদকে হত্যা করে তার গাড়িচালকসহ পাঁচজন। নয় বছর পর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজুকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বারিধারায় এটিইউর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পুলিশ সুপার (ইন্টেলিজেন্স) এম এম হাসানুল জাহিদ এসব কথা জানান।

আফতাব আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজু মুন্সি গ্রেফতারের পর জামিন পেয়ে আত্মগোপনে যান। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে বারবার মোবাইলের সিম পরিবর্তনসহ যোগাযোগও বন্ধ করে দেন পরিবারের সঙ্গে। দীর্ঘ নয় বছর পর মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে রাজুকে গ্রেফতার করে অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট।

সাংবাদিক আফতাব হত্যা : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজু মুন্সি গ্রেফতার

এটিইউ জানিয়েছে, বাসা ভাড়ার কথা বলে ঘাতকরা সাংবাদিক আফতাব আহমেদের বাসায় প্রবেশ করে। তাদের সহযোগিতা করে তার গাড়িচালক হুমায়ুন কবির। পরে ঘাতকরা বাসায় ঢুকে ডাকাতির চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেন আফতাব আহমেদ। একপর্যায়ে তিনি চিৎকার শুরু করেন। পরে ঘাতকরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

ঘাতক রাজু মুন্সির সঙ্গে সাংবাদিক আফতাবের গাড়ির চালক হুমায়ুন কবির মোল্লার আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে বলে জানায় এটিইউ।

হাসানুল জাহিদ বলেন, আফতাব আহমেদ পশ্চিম রামপুরা ওয়াপদা রোড এলাকায় নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকতেন। তার ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার হুমায়ুন কবিরের সহায়তায় বাসা ভাড়া নেয়ার কথা বলে রাজুসহ বেশ কয়েকজন ২০১৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর ওই বাসায় ঢোকে। সেখানে তারা টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করার চেষ্টা করে। এ সময় ঘাতকদের বাধা দিয়ে চিৎকার করতে থাকেন আফতাব আহমেদ। একপর্যায়ে ঘাতকরা তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ঘটনার পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

সাংবাদিক আফতাব আহমেদ হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসা‌মি গ্রেপ্তার

এটিইউর এ কর্মকর্তা বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর ২৬ ডিসেম্বর রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরই পাঁচজনকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। গ্রেফতারের এক বছরের মাথায় রাজু মুন্সিসহ দুই আসামি জামিনে মুক্তি পেয়ে আত্মগোপন চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, রাজু দীর্ঘ নয় বছর ছদ্মবেশে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। এ সময় পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। গ্রেফতার আসামির বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ হুমায়ুন, রাজুসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন উচ্চ আদালত।

সাংবাদিক আফতাব আহমেদ দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোসাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে অনেক দুর্লভ ছবি তোলেন। আলোকচিত্র সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য ২০০৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ