
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২১, ০৫:৩৪ পিএম
অনগ্রসর এবং মৎস্য সম্পদের
অপ্রতুলতা বিবেচনায় নিয়ে নেত্রকোনার সদর
উপজেলার ‘দক্ষিণ বিশিউড়া’ গ্রামকে (মৎস্য চাষ) ও শরীয়তপুরের
নড়িয়া উপজেলার ‘হালইসার’ গ্রামকে জেলে পরিবার হিসেবে
অন্তর্ভুক্ত করে ‘মৎস্য গ্রাম’ ঘোষণার
জন্য চিহ্নিত করা হয়। এরই
ধারাবাহিকতায় প্রায় এক বছর ধরে
উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে।
এ দুটি গ্রামের মানুষ
আগের চেয়ে এখন অর্থনৈতিকভাবে
ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য
অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক খ: মাহবুবুল হক।
অতিরিক্ত
মহাপরিচালক খ: মাহবুবুল হক
সিটি নিউজকে বলেন, ‘একটি গ্রামকে আদর্শ
গ্রাম করার জন্য যা
যা প্রয়োজন (স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্যানিটারি, কৃষি, প্রশিক্ষণ)সহ সব বিষয়
সম্পৃক্ত করে সরকারের বিভিন্ন
দফতরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর
সঙ্গে আমাদের মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা গ্রামবাসীর প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় মৎস্য
গ্রামে পরিণত করেছেন।’
তিনি
আশা করেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ
মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে এ দুটি মৎস্য
গ্রামের পরিপূর্ণতা পাবে চলতি বছরের
১৬ ডিসেম্বর। যা অন্য গ্রামের
কাছে অনুকরণীয় ও অনুস্মরণীয় হবে।
পরবর্তীতে দেশের সব গ্রামে সম্প্রসারণ
করা হবে।
মৎস্য
অধিদফতরের উপ-পরিচালক (মৎস্য
চাষ) আজিজুল হক সিটি নিউজকে
বলেন, “আমরা মৎস্য গ্রাম
হিসেবে চিহ্নিত করে কাজ শুরুর
আগেই গ্রামটিকে সার্ভে করেছি। এতে দেখা গেছে,
নেত্রকোনার সদর উপজেলার ‘দক্ষিণ
বিশিউড়া’ গ্রামের
আয়তন ৪০.৬৩ হেক্টর,
জনসংখ্যা ২২৫৩ জন, পরিবার
৪৯৯টি, মৎস্যচাষী ১৬৩ জন, পুকুর-দীঘি রয়েছে ২০২টি।
এ গ্রামের মানুষকে মৎস্য চাষের জন্য হাতে-কলমে
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সব পুকুর ও
দীঘিতে বিজ্ঞানসম্মত মাছ চাষ কার্যক্রম
বাস্তবায়ন ও পুষ্টির চাহিদা
পূরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ
ও প্যাকেজ ভিত্তিক পুকুরে মাছ চাষ প্রদর্শনী,
বিল নার্সারি স্থাপন ও পোনা অবমুক্তকরণ,
মাছচাষিদের দল গঠন করা
হয়েছে। পাশাপাশি বিপণনসহ আর্থিকভাবে সহায়তাও করা হচ্ছে বিভিন্ন
প্রকল্পের মাধ্যমে।
অপরদিকে
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ‘হালইসার’ গ্রামের (জেলে গ্রাম) আয়তন
১.২০ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা
৪২০০ জন, পরিবার ৪৮০,
জেলের সংখ্যা ২১৪৩ জন, পুকুর-দীঘি ৫০টি।
এসব
বিবেচনায় এনে জেলেদের দল
গঠন, প্রশিক্ষণ, বিকল্প কর্মসংস্থান ও ঋণসহায়তা প্রদান,
উন্মুক্ত জলাশয় তথা বিল ও
প্লাবনভূমিতে সমাজভিত্তিক মৎস্য ব্যবস্থাপনা দল গঠন, জলাশয়
সংস্কার ও মাছের অভয়াশ্রম
স্থাপন এবং কমিউনিটি সঞ্চয়
দল গঠনের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন। বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে গাভী পালন সেলাই
মেশিন বিতরণ ও প্রশিক্ষণ দেয়া
হয়েছে।”
তিনি
আরো বলেন, ‘গ্রাম দুটির মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের অন্যান্য দফতরের সহায়তায় গভীর নলকূপ ও
স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা স্থাপন, যানবাহন চলাচল উপযোগী রাস্তা নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, সুফলভোগীদের হাঁস-মুরগি ও
গবাদি পশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা
গ্রহণ এবং গ্রামের অধিবাসীদের
সন্তানদের শতভাগ শিক্ষা কর্মসূচি নিশ্চিতকরণ ও অন্যান্য শিক্ষা
কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
তরিকুল/এম. জামান