প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২৩, ০৩:১৯ পিএম
বরিশালে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ক্রাশ অ্যান্ড কনফেশন যুক্ত করে ফেসবুকে পেজ খুলে মেয়েদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, পোস্টদাতা নিজের পরিচয় গোপন রেখে শিক্ষার্থীদের নাম, ঠিকানা উন্মুক্ত করে তাদের সামাজিকভাবে হেয় করছেন। এসব কর্মকাণ্ডকে সাইবার অপরাধ উল্লেখ করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পুলিশের।
বরিশালে শিক্ষার্থীদের এখন আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ‘ক্রাশ অ্যান্ড কনফেশন’ নামের বিভিন্ন ফেসবুক পেজ। এসব পেজে শিক্ষার্থীদের ছবিসহ নাম-পরিচয় দিয়ে প্রেম নিবেদনের পোস্ট করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের ছবি দিয়ে পরিচয় উন্মুক্ত করে পোস্ট করা হয় বিয়ে কিংবা প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে। অথচ যার ছবিসহ পোস্ট দেয়া হচ্ছে তিনি কিছুই জানেন না।
শিক্ষার্থীরা জানান, ফেসবুকের যোগাযোগমাধ্যমে প্রেম নিবেদনের এসব পোস্টের কারণে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে তাদের।
নাবিলা নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, শহরে পরিবারসহ যেসব মেয়েরা থাকে তাদের পরিবারগুলো অনেক সময় এসব সমস্যা বুঝতে পারে। কিন্তু গ্রামের মেয়েদের পরিবারগুলোকে এসব বোঝানো খুবই কঠিন। দিনশেষে মেয়েদেরই দোষ দেয় সমাজব্যবস্থা।
ইসরাত নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা মেয়েরা সবসময় নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হই। নতুন সমস্যার নাম হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এসব পেজ। আশা করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ অথবা গ্রুপ খোলা আইনত অপরাধ বলছেন শিক্ষকরা।
সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলামিন সরোয়ার বলেন, ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের নামের শেষে ক্রাশ অ্যান্ড কনফেশন যুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব করা আসলেই ভয়াবহ ব্যাপার। এর বিরুদ্ধে এখনই সবাই সচেতন না হলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও বড় হবে।’
সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন ‘কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে যদি অনলাইনে কিছু করতে হয় তাহলে তা একমাত্র সেই প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিরাই করতে পারে। অন্য কেউ অনলাইনে কোনো প্রতিষ্ঠানে নাম ব্যবহার করে অপকর্ম করবে তা মানা হবে না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিম বলেন, ‘এসব কর্মকাণ্ড সাইবার অপরাধ। আমরা নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। পাশাপাশি এসব বন্ধে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
বরিশাল নগরীতে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি কলেজ ও ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের নামের শেষেই ক্রাশ অ্যান্ড কনফেশন যুক্ত করে ফেসবুকে পেজ খুলে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।