স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চলতি বছরের মার্চ থেকে নিজ কর্মস্থলেই অতিরিক্ত সময়ে প্রাইভেট রোগী দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে সরকারি চিকিৎসকদের। তারা যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সেখানে বসেই রোগী দেখতে পারবেন।
রোববার (২২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্মেলনে কক্ষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কর্মস্থলে রোগী দেখার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের কী কী সুবিধা-অসুবিধা আছে, তা নিয়ে আমরা বিশদ আলোচনা করেছি। ডাক্তাররা কোথায় বসবেন, তাদের ফি কত হবে এবং কারা কারা রোগী দেখবেন, কতক্ষণ দেখবেন; সব বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। এ বিষয়ে টিম গঠন করে দেয়া হয়েছে।’
বাইরের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের আর রোগী দেখতে হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, স্বাধীনতার মাস মার্চ থেকে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু করতে পারব। পর্যায়ক্রমে আমাদের এ সংক্রান্ত পাইলট প্রজেক্ট বাস্তবায়ন শুরু হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চাশটি উপজেলা, ২০টি জেলা ও পাঁচটি মেডিকেল কলেজ নিয়ে আমরা যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে জনগণ আরেকটু ভালো স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। কারণ হাসপাতালে গিয়ে তারা চিকিৎসক পাবেন। যারা ভর্তি আছেন, তারাও চিকিৎসা পাবেন। একসঙ্গে অনেক ডাক্তার পাওয়া যাবে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষারও ব্যবস্থা থাকবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাইরে ডাক্তার দেখাতে যে খরচ হয়, তার চেয়ে কমে এই সেবা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলতার সঙ্গে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, চোখের কর্নিয়া ও দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সারা ইসলাম নামের একজন কিশোরী তার মায়ের সম্মতিক্রমে এ কিডনি দিয়ে গেছেন।
যাদের শরীরে এই কিডনি ও কর্নিয়া স্থাপন করা হয়েছে, তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ কাজটি হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিছুদিন আগে তারা লিভার প্রতিস্থাপন করেছে। স্বাস্থ্যসেবায় যা মাইলফলক। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশে আরও কিডনি, কর্নিয়া ও লিভার প্রতিস্থাপন করা হবে। আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। যা দ্রুতগতিতে হচ্ছে। মানুষ বিদেশে যায় এসব চিকিৎসার জন্যই। যা আমরা বাংলাদেশে করতে সক্ষম হয়েছি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কিডনি ইনস্টিটিউটেও ট্রান্সপ্ল্যান্ট হচ্ছে। যা আরও জোরদার করা হবে। শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটেও কিডনি প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করছি। আমরা কিছুদিন আগে আমেরিকায় গিয়েছিলাম। সেখানকার নেবরাসিকা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে।’
‘তারা কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপনে আমাদের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেবেন। এছাড়া টিকা উৎপাদনে তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে একটি সমঝোতা সই করেছি। আমাদের প্রতিনিয়ত চেষ্টা আছে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নের। মানুষকে যাতে বিদেশে যেতে না হয়, সেই চেষ্টা করছি,’ যোগ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সাজেদ/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন