প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২৩, ০১:২০ এএম
ইসলামবিরোধী শিক্ষা সিলেবাস বাতিল, দুর্নীতির মূলোৎপাটন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও দেশে ইসলামী হুকুমত কায়েমের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী ইসলামী ঐক্যজোটের উদ্যোগে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে এ সমাবেশের নেতৃত্ব দেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ।
মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, বিতর্কিত সিলেবাসের মাধ্যমে দেশের নতুন প্রজন্মকে নাস্তিক ও পৌত্তলিক বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে। পাঠ্য বইয়ে নগ্ন ছবি, পর্দা, দাড়ির বিরোধিতা, মূর্তিসহ ডারউইনের বিবর্তনবাদ ও হিন্দুত্ববাদ সংযোজন করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ঈমানহারা করার পাঁয়তারা চলছে। ৯২ ভাগ মুসলমান দেশের পাঠ্যপুস্তকে ডারউইনের মতবাদ দেখতে চায় না। তারা দেশীয় ও ধর্মীয় সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ইতিহাসের সঠিক উপস্থাপন দেখতে চায়।
তিনি বলেন, ইসলামবিরোধী বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ৯২ ভাগ মুসলমানের চিন্তা-চেতনা অনুযায়ী আলেমদের তত্ত্বাবধানে নতুন শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। একইসঙ্গে ইসলামবিরোধী এই সিলেবাস প্রণয়নে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় ইসলামী ঐক্যজোট বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে নাস্তিক-মুরতাদদের দেশ থেকে বিতাড়িত করে ছাড়বে ইনশাল্লাহ।
ইসলামী দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের ওমুক সরকার তমুক সরকারের প্রয়োজন নেই। সব সরকার আমরা দেখেছি। এখন প্রয়োজন ইসলামী সরকার। প্রয়োজনে নেতৃত্ব ছেড়ে দেব, নেতৃত্ব নেন। ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য যা যা প্রয়োজন আপনারা পদক্ষেপ নিন। কর্মী হিসেবে মাঠে থাকব ইনশাল্লাহ।
সারা দেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ করায় সরকারকে সাধুবাদ জানিয়ে হাসানাত আমিনী বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণ করছেন সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে মডেল মসজিদে কওমি মাদরাসা পড়ুয়া ও হক্কানি উলামায়ে কেরামকে নিয়োগ দিতে হবে। কোনোভাবেই ভ্রান্ত আকিদা পোষণকারীদের নিয়োগ করবেন না। এতে মডেল মসজিদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হবে।
মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, সিলেবাসে ইসলামের ফরজ বিধান পর্দাকে অবমাননা করা হয়েছে। দাঁড়ির বিরুদ্ধে বিদ্রূপ করে মহানবীর (সা.) সুন্নতের প্রতি চরম দৃষ্টতা প্রদর্শন করা হয়েছে। সমকামিতাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে ইসলাম বিরোধী শক্তির এহেন অপকর্মে পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাঠ্য বইয়ের পাতায় পাতায় ইসলাম বিদ্বেষ ও ইসলামী নিদর্শনের অবমাননা করে নাস্তিক্যবাদী অপশক্তি আল্লাহর বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা মনে করি, মুসলমানের ট্যাক্সের টাকায় ছাপা নৈতিকতা ও আদর্শ বিবর্জিত এসব বই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে চলতে পারে না। দ্রুত এসব বই বাজেয়াপ্ত করতে হবে। যারা এ ধরনের ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে নাস্তিক্যবাদী প্রজন্ম তৈরি ষড়যন্ত্র করছে এবং ধর্ম অবমাননা করেছে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় দেশে আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং প্রতিটি থানায় থানায় যেসব মডেল মসজিদ হচ্ছে সেখানে হক্কানি আলেমদের ইমাম ও খতিব নিয়োগ দিতে হবে। যারা ভিন্ন চিন্তা লালন করে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের পরিপন্থী কোনোভাবেই তাদের নিয়োগ দেয়া যাবে না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড় হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে এসে দোয়ার মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।