• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ইজতেমা শেষে যেভাবে সহজে ফিরতে পারবেন মুসল্লিরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০৫:৫৯ পিএম

ইজতেমা শেষে যেভাবে সহজে ফিরতে পারবেন মুসল্লিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে কুয়াশা ও কনকনে শীত উপেক্ষা করে দেশ বিদেশ থেকে আগত লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আখেরি মোনাজাত শেষে শুরু হয় বাড়ি ফেরার পালা।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইলের সুরাসদস্য কারি মোহাম্মদ জোবায়ের। মোনাজাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ যেভাবে সহজে ফিরতে পারবেন গন্তব্যে সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

বিশ্ব ইজতেমা শেষে বাড়ি ফিরতে ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলে বেশকিছু নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। ইজতেমা পরবর্তী সময়ে যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট স্থান। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে এসব নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ।

পূর্বেই জানানো হয়েছে, টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগরা বাইপাস পর্যন্ত এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও গাজীপুরগামী যানবাহনগুলোকে গাবতলী দিয়ে কোনাবাড়ি হয়ে এবং ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগরা বাইপাস দিয়ে তিনশো ফিট রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

সাধারণ যানবাহনের পাশাপাশি ইজতেমা উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন সার্ভিসও চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ইজতেমায় আগতরা বাড়ি ফেরার পথে সব ট্রেনের সার্ভিস নিতে পারবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের প্রতি বিশেষ আবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেন, বাস বা অন্য কোনো যানবাহনের ছাদে উঠে বা বাম্পারে ঝুলে জীবনে ঝুঁকি নেবেন না। বরং কিছু সময় অপেক্ষা করলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে ভ্রমণের আহ্বান জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সম্ভব হলে কিছু পথ হেঁটে এগিয়ে গেলেও ভিড় ও অনেক জটিলতা এড়ানো যাবে। ইজতেমা থেকে বাড়ি ফিরতে আজ সব আন্তঃনগর ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে দাঁড়াবে।

ঢাকা-টঙ্গী স্পেশাল ট্রেন : ইজতেমা উপলক্ষে টঙ্গী-ঢাকা স্পেশাল-১ টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে, আর ঢাকা পৌঁছবে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে এভাবে চলাচলের জন্য ১৩ টি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা আছে।

টঙ্গী-ময়মনসিংহ স্পেশাল ট্রেন : টঙ্গী-ময়মনসিংহ-১: টঙ্গী থেকে ছাড়বে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে আর ময়মনসিংহ পৌঁছবে ৩টা ৫৫ মিনিটে। টঙ্গী-ময়মনসিংহ-২: টঙ্গী থেকে ছাড়বে দুপুর ১২-৪০ মিনিটে আর ময়মনসিংহ পৌঁছবে দুপুর ৪-৫৫ মিনিটে।

টঙ্গী-টাঙ্গাইল স্পেশাল ট্রেন : টঙ্গী-টাঙ্গাইল স্পেশাল ট্রেন টঙ্গী ছাড়বে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে আর টাঙ্গাইল পৌঁছবে দুপুর ২টা ২০ মিনিটে।

উল্লেখ্য, আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম পর্বের ইজতেমা। চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় পক্ষের (সা’দ অনুসারী) ইজতেমার আয়োজন।

এ বছর বিশ্ব ইজতেমায় এখন পর্যন্ত ৭ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- নরসিংদীর মনোহরদী থানার মাসিমপুর গ্রামের রহমতুল্লাহর ছেলে হাবিবুর রহমান হাবি, চট্টগ্রামের রাউজান থানা সদরের আবদুর রশিদের ছেলে আবদুর রাজ্জাক, খুলনার ডুমুরিয়া থানার মলমলিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে মুফাজ্জল হোসেন খান, গাজীপুরের আবু তৈয়ব ওরফে আবু তালেব, সিলেটের নুরুল হক, মুন্সীগঞ্জের আক্কাস আলী এবং ঢাকার বংশালের কাজী আলাউদ্দিন রোড এলাকার বাসিন্দা ছমির উদ্দিনের ছেলে আনিসুর রহমান (৭১)।

এবারের বিশ্ব ইজতেমায় বিশেষ আকর্ষণ ছিল যৌতুকবিহীন শতাধিক বিয়ে। ইজতেমার দ্বিতীয় দিন শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মাওলানা জহির ইবনে মুসলিম সাংবাদিকদের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভারতের মাওলানা মো. জোহায়রুল হাসান ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম-উত্তর দিকের দোয়া মঞ্চে এ বিয়ে পড়ান। হজরত ফাতেমা (রা.) ও হজরত আলী (রা.)-এর বিয়ের দেনমোহর অনুসারে বিনা যৌতুকে শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আগে বাদ-আসর হাফেজ মাওলানা জোবায়ের বিয়ের খুতবা প্রদান করেন।

বয়ান শেষে বর-কনের অভিভাবকদের সম্মতিতে বরের উপস্থিতিতে এ বিয়ে পড়ানো হয়। বিয়ে শেষে উপস্থিত দম্পতিদের স্বজন ও মুসল্লিদের মধ্যে খুরমা খেজুর বিতরণ করা হয়।

আর্কাইভ