• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বের জেরে খুন হলেন সরকারি কর্মচারী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৩:৫৭ পিএম

ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বের জেরে খুন হলেন সরকারি কর্মচারী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে নিহত হয়েছেন সরকারি চাকরিজীবী ফিরোজ আহমেদ। তবে নিহত ফিরোজ ছাত্রলীগের সমর্থক হলেও কোনো পদে ছিলেন না বলে দাবি পুলিশের। এ ঘটনায় সাকিব হোসেন (২২) নামে অপর এক যুবক আহত হয়েছেন। নিহত ফিরোজ সমাজসেবা অধিদপ্তরের হিসাব সহকারী ছিলেন।

আহত সাকিব হোসেন জানান, গত শনিবার রাতে নতুন বছর বরণ করার জন্য শেরেবাংলা নগর থানাধীন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল অফিসের সামনে ছাত্রলীগের ছেলেরা জড়ো হন। সেখানে ফিরোজও অংশ নেন। আগে থেকেই শেরেবাংলা নগর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি তালহা ও ওয়ার্ড সভাপতি মুরাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এসব দ্বন্দ্বের কারণে রাতে সেখানে একটি মারামারি হয়। ঐ মারামারির সময় তালহাসহ তার লোকজন ফিরোজকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে আহত করে। পরে হাসপাতালে ফিরোজের মৃত্যু হয়। 

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া জানান, এলাকার আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল ওয়ার্ড সভাপতি ও থানা ছাত্রলীগের সভাপতির মধ্যে। এ কারণে গত রাতে একটি মারামারির ঘটনায় ফিরোজকে লাঠি দিয়ে পেটায় ও ছুরিকাঘাতে করে। এতে তার মৃত্যু হয়। নিহত ফিরোজ ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও সমর্থক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেতা মুরাদের সঙ্গে তার চলাফেরা ছিল। তবে ফিরোজের সঙ্গে কারো কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে তিনি হত্যার শিকার হন। আসামি ধরতে একাধিক টিম কাজ করছে।

নিহতের চাচা আনোয়ার হোসেন জানান, ফিরোজ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি খুবই ভালো ছাত্র ছিলেন। পরে যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি পেয়েছেন। ফিরোজের বাবার নাম টিপু সুলতান। মায়ের নাম ফিরোজা বেগম। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আজিমপুর অফিসে হিসাব সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ফিরোজ। 

নিহতের ছোট ভাই নুর আলম মিরাজ জানান, তারা আগারগাঁও তালতলায় পানির টাংকির পাশে পিডব্লিউডির কোয়ার্টারে থাকেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগারগাঁও ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিসের সামনে থেকে বাসায় ফেরার সময় বিজ্ঞান জাদুঘরের বিপরীত পাশের রাস্তায় ছাত্রলীগের নেতা তালহা, নাসির, রাজু, মুহিদ, নয়ন, লিমন, যথি, রানা, রাব্বি, আল-আমিন, ওবায়দুল, সোহাগসহ ২০-২৫ জন মিলে ফিরোজকে ছুরিকঘাত ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

পরে হাসপাতালে পুলিশ নিহতের সুরতহাল  প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠান। গতকাল মর্গের একটি সূত্র জানায়, মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বাম পায়ের ঊরুর পেছনে চারটি জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। পরে নিয়ম অনুযায়ী স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

সাজেদ/

আর্কাইভ