• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আমরা এখন বৈদেশিক ঋণ প্রত্যাখ্যান করি: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২২, ০৯:৪৪ পিএম

আমরা এখন বৈদেশিক ঋণ প্রত্যাখ্যান করি: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

আমরা এখন বৈদেশিক ঋণ প্রত্যাখ্যান করি। বাংলাদেশ এক সময় পরমুখাপেক্ষী ছিল। বাজেট প্রণয়নের জন্য বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হতো। আমাদের অর্থমন্ত্রীকে প্যারিস কনসোর্টিয়ামের বৈঠকে ছুটে যেতে হতো। আমাদের বাজেটের বেশিরভাগ অংশ আসত অনুদান ও ঋণ থেকে। এখন পরিস্থিতি উল্টে গেছে। আমাদের ৯০ শতাংশ আমরা নিজেরা যোগান দিই। বাংলাদেশ এখন নিজের পায়ের দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে দুটি বইয়ের মোড় উন্মোচন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ নিয়ে রুশ দূতাবাসের বিবৃতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশি কূটনীতিকদের ভিয়েনা কনভেনশন মেনে চলা উচিত। রুশ দূতাবাস থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে, সেখানে অনেকগুলো কথা বলা হয়েছে। প্রথমত কিছু কিছু দেশ যখন সরকারকে চাপে রাখতে চেষ্টা করে, তখন তারা মানবাধিকারের ধুয়া তোলে। অর্থাৎ সরকারকে চাপে রাখতে মানবাধিকারকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। রুশ বিবৃতিতে সেই কথাও এসেছে।

‘সেসব দেশে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়, তারাই সবচেয়ে বেশি মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু বাংলাদেশের একান্তই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের বিষয়টি তুলে ধরেছে রুশ দূতাবাস। আমরা সব সময় এমন বিবৃতি দেখি না, তবে যারা ভিয়েনা কনভেনশন অমান্য করেন, তাদের বোধোদয় হওয়ার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক হবে,’ যোগ করেন মন্ত্রী। ‘কাজেই যখন বিদেশি কূটনীতিকরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করেন, তখন তা আমাদের স্বাধীনতার স্বকীয়তার জন্য হস্তক্ষেপ হয়ে দাঁড়ায়। তবে যারা এই নাক গলান, তাদেরই দোষ দিচ্ছি না, বরং যারা ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে ছুটে গিয়ে তাদের পদলেহন করেন, তারাও দায়ী,’ বললেন হাছান মাহমুদ।

তিনি জানান, কেবল পদলেহনই না, তাদের (কূটনীতিকদের) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। যারা এমনটা করেন, তারাই সত্যিকারের দোষী। সব সূচকেই বাংলাদেশ আজ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। এ নিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রচণ্ড বিতর্কও হয়। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্র রচনার স্বার্থকতা আমরা দেখতে পেয়েছি। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপরিচালনার স্বার্থকতা সেখানেই যে আজ পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে নিশ্বাস ফেলে। আমাদের দলে জননেত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মী-সমর্থক চায় শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে আছেন, ততদিন দলকে নেতৃত্ব দেবেন। কেবল দলই না, রাষ্ট্র পরিচালনায়ও তার বিকল্প আজ বাংলাদেশে নেই। তিনি যেভাবে দেশ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, একটি অনুন্নত দেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছেন। উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার যে প্রাণান্তকর চেষ্টা, বিশ্ব সম্প্রদায় তার প্রশংসা করেছেন। তার বিকল্প আওয়ামী লীগে কেউ নেই।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন সবসময় জাতির জন্য মাইলফলক আখ্যায়িত করে দলটির এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা থাকে। এখন রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও রাজনীতির জন্য বার্তা থাকে। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এখনও মাঝে মাঝে ফনা তুলছে। আর আমাদের দেশকে নিয়ে বিএনপিসহ তার মিত্ররা যেভাবে ষড়যন্ত্র করছে, এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে আবারও ভূমিধস বিজয় ছিনিয়ে আনতে আমাদের দলকে আরও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়ে সুসংগঠিত করা হবে।

সাধারণ সম্পাদক পদে যেসব নাম আছে, তার মধ্যে আপনার নামও আছে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, সম্মেলন হলে অনেক নাম আসবে। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কে কোন পদে থাকবেন, তা একমাত্র তিনি নির্ধারণ করবেন।

 

এনএমএম/এএল

আর্কাইভ