• ঢাকা শুক্রবার
    ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

পয়লা ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে একুশের বইমেলা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২২, ২০২২, ০৭:২৭ পিএম

পয়লা ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে একুশের বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। করোনা অতিমারির কারণে গত দুটি বইমেলা ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুসারে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুরু হতে পারেনি। এবার মেলার মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পড় বই গড় দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তা ছাড়া চতুর্থ ডোজের টিকাদানও শুরু হয়েছে। আপাতত সংক্রমণ নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। আমরা আশা করছি, পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকেই মাসব্যাপী বইমেলা শুরু করতে পারব।’ তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার মেলামঞ্চে এসে বইমেলা উদ্বোধন করবেন বলে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন।

সাধারণত প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমির মূলমঞ্চে প্রধান অতিথি হিসেবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি মঞ্চে উপস্থিত না থেকে ভার্চুয়ালি গত দুটি মেলার উদ্বোধন করেছেন। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল এবং চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেলা শুরু হয়েছিল।

সদস্য সচিব জানান, স্টল বরাদ্দের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর, যা শেষ হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। ৪৫৩টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। স্পনসরের জন্য ই-টেন্ডারও সম্পন্ন হয়েছ। শিগগিরই চূড়ান্ত বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপর শুরু হবে অবকাঠামো তৈরির কাজ।

এবারের মেলাও হবে দুটি অংশে। বাংলা একাডেমির মাঠে থাকবে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ থাকবে প্রকাশকদের জন্য। উদ্যানের প্রায় ছয় লাখ বর্গফুট এলাকা নিয়ে হবে মেলার পরিসর। একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, গতবার মেলার এত বড় পরিসর নিয়ে অনেকে আপত্তি করেছেন। তবে মেলার পরিসর ছোট করা হবে না। কারণ, প্রতিবছরই লোক বাড়ছে। ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার স্টলসহ অন্যান্য সেবার বিন্যাস পরিবর্তন করা হবে।

প্রকাশনার সব স্টল থাকবে স্বাধীনতাস্তম্ভের সামনে থেকে উদ্যানের পশ্চিম অংশে। শিশুদের বইয়ের কর্নার থাকবে মুক্তমঞ্চের কাছে। এই অংশে এবার অন্য কোনো স্টল থাকবে না। ফলে যাঁরা শুধু বই কিনতে চান, তাঁদের আর পূর্ব–পশ্চিম দুই প্রান্ত ঘুরতে হবে না।


এ ছাড়া এবার ক্রেতাদের সুবিধার্থে প্রবেশপথের সামনে বড় আকারের দুটি ডিজিটাল বোর্ডে মেলার দিকনির্দেশনা থাকবে। উপরন্তু প্রতি সারির সামনে স্টলের নম্বর ও প্রকাশকদের পরিচিতিসহ একটি করে ডিজিটাল বোর্ড বসানো হবে। এতে পছন্দের প্রকাশকদের স্টল খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।

পূর্ব প্রান্ত অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশের অংশে থাকবে খাবারের দোকান, মোড়ক উন্মোচন, লেখক বলছি মঞ্চ, নামাজের স্থান, শৌচাগার ও মেলার সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপনা। এবার মেলার ভেতরে ক্রেতাদের বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। গাড়ি পার্কিং থাকবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রান্তের প্রবেশপথের পাশে।

এবার মুদ্রণ খরচ বৃদ্ধিসহ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রকাশকরা স্টল বরাদ্দ নেয়ার ভাড়া কমানোর আবেদন করেছিলেন। তবে ভাড়া কমানো হয়নি।

বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি এবং আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গনি বলেন, স্টলের ভাড়া কমালে ভালো হতো। মুদ্রণের খরচ অনেক বেড়েছে। সাধারণত ৮০ গ্রাম অফসেট কাগজে বই ছাপা হয়। এর দাম গত বছর ছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা রিম, এখন তা ৩ হাজার ৫০০ টাকা। বাধ্য হয়ে বইয়ের দাম কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। পাঠকের কথা বিবেচনা করে বইয়ের দাম এবার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে জাতির মেধা–মনন বিকাশের সঙ্গে অচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত এই প্রকাশনা খাতটি যেন বিপর্যস্ত হয়ে না পড়ে, সে জন্য সরকারি প্রণোদনা দেয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

 

সজিব/এএল

আর্কাইভ