প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২, ১০:৩৩ পিএম
"প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে আপন ছোট ভাইকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেও নিবৃত্ত হননি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম। নরসিংদী ছাড়া করতে মামলা-হামলা চালাচ্ছেন। হুমকি দিচ্ছেন প্রাণনাশের।"
বুধবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সচিব হামিদা বেগমের আপন ছোট ভাই শফিউল আজম। সংবাদ সম্মেলনে সচিব হামিদা বেগমের প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও হামলা-মামলা থেকে নিষ্কৃতি, তার দখল করে নেয়া পৈত্রিক বাড়ি উদ্ধার এবং স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নিরাপদে নরসিংদীর নিজ গ্রামে বসবাসের অধিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে শফিউল আজম অভিযোগ করে বলেন, আমি আজ জীবনের এক ক্রান্তিলগ্নে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আপনাদের লেখনির মাধ্যমে সুবিচার পেতে জানাতে এসেছি আমার আপন বোন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদা বেগম কর্তৃক নরসিংদী’র মধাবদী থানার খোর্দ্দনওপাড়া গ্রামের পৈত্রিক বাড়ি-ভিটা থেকে আমাকে স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ উচ্ছেদ করেও খান্ত হননি। তার পালিত স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন থেকে প্রানে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার বড় বোন পুর্ণসচিব পদমর্যাদায় পদোন্নতি পাওয়ার পর থেকে আমার পরিবারের উপর অত্যাচারের স্টীম রোলার চালাচ্ছেন। হামিদা বেগম জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় বিগত ০১/০৪/২০১২ ইং সালে রাতের বেলায় আমাকে, প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক আমার স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ সবাইকে নিজে স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তার বাহিনী দ্বারা জোর পূর্বক ঘর থেকে বের করে দেন। তার সেদিনের উচ্ছেদ কর্ম মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনই নয়, পাক হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এলাকাবাসী সবাই এহেন কর্মকান্ডকে ধিক্কার দিলেও কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। তিনি বলেন, আমার পৈত্রিক এই বাড়ি-ভিটা আমার বোন কর্তৃক অবৈধ দখলের পর থেকে আমি আমার পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলাম। সুবিচার পাওয়ার আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কারো সহযোগিতা পাইনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গিয়ে উচ্ছেদ মামলা তো দুরের কথা, একটি জিডিও করতে পারিনি। উঠতে পারিনি আমার পৈত্রিক বাড়িতে। সচিব হামিদা বেগম আমার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত মাধবদী বাজারের ২১ বছরের ঘর ভাড়া ও জমির ন্যায্য হিস্যা থেকেও আমাকে বঞ্চিত করেছে।
শফিউল আজম বলেন, আমি বেশ কিছুদিন খোলা আকাশের নিচে বসবাসের পর আমার পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত একটি ভিটা যা প্রায় ১৫-২০ ফুট গভীর ছিলো, সেখানে ধারকর্য করে অনেক টাকা ব্যয়ে বালি মাটি ভরাট করে চারিদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে একটি বাড়ী নির্মাণ করে আমার শিক্ষিকা স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাসছিলাম। এখানেও আমার বোন হামিদা বেগম তার প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন। আমার স্ত্রীকে দুরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বদলির জন্য শিক্ষা অফিসারদের চাপ সৃষ্টি করছেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, সচিব হামিদা বেগম তার নীল নকশা অনুযায়ী আমার পুরো পরিবারকে নরসিংদী ছাড়া করতে তার প্রশাসনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন।
সচিবের নগ্ন তৎপরতা বন্ধ, পৈত্রিক ভিটে-মাটি ফেরত পাওয়া এবং বর্তমান বাড়িতে পরিবার নিয়ে একজন নাগরিক হিসেবে নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারার আকুতি জানিয়ে শফিউল আজম জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের শীর্ষ মহলে গত ১৬/১১/২০২২ইং তারিখ পত্র দিয়েছেন। তিনি অসহায় আপন ভাইয়ের প্রতি এমন বোনের নির্মমতার কথা বলতে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
আইএ/