• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

ফারদিন হত্যা মামলায় বান্ধবী বুশরা রিমান্ডে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২, ০৯:২২ পিএম

ফারদিন হত্যা মামলায় বান্ধবী বুশরা রিমান্ডে

আদালত প্রতিবেদক

বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যার ঘটনায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার এসআই মো. গোলাম মাওলা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেফতার করা হয়। ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানার মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ৪ নভেম্বর বেলা তিনটার দিকে ফারদিন নূর ডেমরার কোনাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বুয়েটের উদ্দেশে বের হন। পরদিন ৫ নভেম্বর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বাসায় ফিরে মায়ের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাওয়ার কথা ছিল তার। পরবর্তীতে তারা (মা–বাবা) জানতে পারেন, ফারদিন নূর পরীক্ষায় অংশ নেননি এবং তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বুয়েটের শিক্ষক ও ফারদিনের সহপাঠীরা তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাচ্ছেন না, তা বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানতে পেরে ৫ নভেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তারাও (মা–বাবা) মুঠোফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের সন্ধান পাননি তারা। এরপর কাজী নূর উদ্দিন রামপুরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এজাহারে লেখা আছে, ফারদিন নূরের বাবা কাজী নূর উদ্দিনের করা জিডির পরিপ্রেক্ষিতে রামপুরা থানা-পুলিশের জেরার মুখে আয়াতুল্লাহ্ বুশরা (ফারদিনের বান্ধবী) জানান, ফারদিন ৪ নভেম্বর বাসা থেকে বের হওয়ার পর ওই দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তার সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। প্রথমে তারা দুজন সিটি কলেজ এলাকায় মিলিত হন এবং পরে নীলক্ষেত–ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে বেড়ান। বিকেল পাঁচটার দিকে ‘ইয়াম চা ডিস্ট্রিবিউশন’ নামের একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ান। রাত ১০টার দিকে আয়াতুল্লাহ্ বুশরার সঙ্গে রিকশায় করে রামপুরা টিভি স্টেশন এলাকায় আসেন ফারদিন।

তিনদিন খোঁজাখুঁজির পর গত সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে তিনি (কাজী নূর উদ্দিন) জানতে পারেন, তার ছেলের লাশ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ। খবর পেয়ে তারা গিয়ে ছেলে ফারদিনের লাশ শনাক্ত করেন।

মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফারদিন নূরকে ৪ নভেম্বর রাত ১০টার পর থেকে ৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত যেকোনো সময়ে রামপুরা এলাকা বা অন্য কোথাও হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তার ছেলের নিখোঁজ হওয়া ও মৃত্যুতে আয়াতুল্লাহ্ বুশরার ইন্ধন রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ অবস্থায় তার ছেলের হত্যার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার নিশ্চিত করতে এজাহার দাখিল করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজের তিনদিন পর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বনানী ঘাট সংলগ্ন লক্ষ্মী নারায়ণ কটন মিলের পেছনে শীতলক্ষ্যা নদীতে পরশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এআরআই

আর্কাইভ