প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২১, ০৭:০২ পিএম
দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দরসহ মোট ছয়টি বন্দরকে
‘পোর্ট অব কল’ হিসেবে ভুটানকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে দুই
দেশ একমত হয়েছে বলে
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
মঙ্গলবার
(১৫ জুন) নৌ-পরিবহন
মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এ টি এম
মোনেমুল হকের নের্তৃত্বে দুদেশের
টেকনিক্যাল কমিটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সংশোধন সংক্রান্ত বৈঠক করেছেন বলে
জানা গেছে। বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধিরা
অনলাইনে যুক্ত থেকে এসওপি সংশোধনসহ
নানা বিষয়ে আলোচনা করছেন।
টেকনিক্যাল
কমিটির প্রধান ও বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এটিএম মোনেমুল হক সিটি নিউজকে
জানান, আমরা দুই দেশের
কমিটি আজ (মঙ্গলবার) অনলাইনে
বৈঠক করেছি। বৈঠকে ভুটানের দাবি অনুযায়ী, ১৪টি
পয়েন্টকে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার
পয়েন্ট হিসেবে স্বীকৃতি চেয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আমরা
৬টিকে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার
পয়েন্ট হিসেবে দিতে সম্মত হয়েছি।
এখন এসওপি সংশোধন করা হবে।
মন্ত্রণালয়
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার
সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ‘ইউজ অব ইনল্যান্ড
ওয়াটারওয়েজ ফর ট্রান্সপোর্টেশন অব
বাইলেটারাল ট্রেড অ্যান্ড ট্রানজিট কার্গোস’-এর অধীনে এসওপি
রয়েছে। নতুন করে এসওপি
সংশোধন হলে ৬টি বন্দরকে
পোর্ট অব কলভুক্ত করতে
নীতিগত সম্মত হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে (চিলমারী, বাহাদুরাবাদ, সিরাজগঞ্জ, মোংলা, চট্টগ্রাম ও পায়রা পোর্ট)
বন্দরকে পোর্ট অব কল হিসেবে
উল্লেখ করা হলে এসব
বন্দর ব্যবহার করতে পারবে ভুটান।
আরও
জানা গেছে, এসপিওতে ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যকার
দুটি নৌপথ রয়েছে। দুটি
নৌপথের শেষ প্রান্ত ভারতের
মধ্যে পড়েছে। ভুটানের সঙ্গে সরাসরি নৌপথ না থাকায়
ভারত থেকে সড়কপথে পণ্য
ভুটানে পরিবহন করা হয়। রুট
দুটি হচ্ছে- চট্টগ্রাম-চাঁদপুর, মাওয়া, আরিচা, সিরাজগঞ্জ, চিলমারী-দৈখাওয়া হয়ে ভারতের ধুবরী।
অপরটি হচ্ছে-মোংলা-কাউখালী, বরিশাল, চাঁদপুর, মাওয়া, আরিচা, সিরাজগঞ্জ, চিলমারী ও দৈখাওয়া হয়ে
ভারতের ধুবরী। দুটি নৌপথেরই একমাত্র
পোর্ট অব কল ছিল
নারায়ণগঞ্জ বন্দর। ভুটান সরকার আরও ৯টি বন্দরকে
‘পোর্ট অব কল’ভুক্ত করার অনুরোধ জানান।
নিয়ম
অনুযায়ী, শুধু পোর্ট অব
কলভুক্ত বন্দরগুলোতে পণ্য ওঠানামার অনুমোদন
দেয়া হয়। যদিও দেশটির
সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি নৌপথ নেই। ভুটান
থেকে সীমিত আকারে পণ্য ভারত হয়ে
নৌপথে বাংলাদেশে আমদানি হয়ে থাকে। এ
ছাড়া আখাউড়া, নকুগাঁও, হালুয়াঘাট, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী ও তামাবিল স্থলবন্দর
এবং ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক
বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামের শাহ
আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে এই এসওপির আওতায়
প্রবেশ ও বাহির হওয়ার
পয়েন্ট হিসেবে চেয়েছে ভুটান।
উল্লেখ্য,
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭
সালের ১৮ এপ্রিল ভুটান
সফরকালে দুই দেশে অভ্যন্তরীণ
নৌপথে পণ্য পরিবহন ও
ট্রানজিট সংক্রান্ত এমওইউ স্বাক্ষর হয়। ২০১৯ সালের
১৩ এপ্রিল এই এমওইউ’র আওতায় এসওপি
স্বাক্ষর হয়। তবে এ
পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ বন্দরে একটি মাত্র জাহাজ
ভুটানের পাথর নিয়ে এসেছে।
তবে
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার
নৌপ্রটোকল চুক্তির আওতায় ১৯টি জাহাজে ভুটানের
পণ্য বাংলাদেশে এসেছে। ভুটানের পণ্য ভারতের ধুবরী
থেকে কুড়িগ্রামের চিলমারীতে আসে।
তরিকুল/এম. জামান